দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ডাক তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম,দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের অধিকতর অনুসন্ধান থেমে গেছে।
জানা যায়, সরকারের জিডিটাল বাংলাদেশ গড়ার মহৎ প্রয়াস গৃহিত প্রকল্পে কাজ বরাদ্ধে সরকারি নীতি ভঙ্গসহ নানা অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের মহাপরিচালক এ কেএম সোহেলে’র চলতি বছর ২৮ ফেরুয়ারী (৮/২/২০২১ ইং তারিখে স্বাক্ষরিত চিঠিতে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট নথি নং ই.এন ৩৭৩। যার স্মারক নং ০০.০১.০০০০.৫০৩.৩২২.২০/৮৮০০ মূলে উল্লেখ রয়েছে, অধিকতর অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে তাদের নিজস্ব তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
দুদকের মহাপরিচালকের স্বাক্ষরিত এই চিঠি আরো উল্লেখ করা হয়েছে, চিঠি প্রাপ্তির ২০ কার্যদিবসের মধ্যে ডাক তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম,দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের বিষয়ে দুদকের মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়,এর আগেগত বছর ১০ ফেব্রুয়ারী (১০/০২/২০২০) ইং তারিখে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম দুদকের সহকারি পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও উপসহকারি পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভলপমেন্ট প্রকল্প((২য় সংশোধিত) এর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে অভিযান পরিচা না করেন।
দুদকের এই টিমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারী অভিযান পরিচালনা পূর্বক প্রতিবেদনে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি উল্ল্যেখসহ বিস্তারিত তদন্তের সুপারিশ করেছেন।
দুদকের সহকারি পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও উপসহকারি পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয় , তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভলপমেন্ট প্রকল্প((২য় সংশোধিত) এর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালিত হয়।
এখানে দেখা যায় প্রকল্প পরিচালকের স্বেচ্ছাচারিতায় লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্পের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের সাথে নেগোসিয়েশন অসমপন্ন।
প্রতিবেদনে বলা হয় প্রকল্পের ৯ নং লটে বান্দরবান, চট্ট্রগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার ও খাগড়া ছড়ি জেলার মোট ৪৮টি উপজেলায় ১১০টি ব্যাচে ২২০০ জন প্রশিক্ষণার্থিকে ফ্রিল্যাঞ্চিং এর উপর প্রশিক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানকারি নির্বাচনে প্রকল্প পরিচালক বিধি ভঙ্গ করেছেন।
কাজ পেতে অংশ গ্রহণকারি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সর্বোচ্চ স্কোর প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিতে স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নেয়া হয়।
তথ্যমতে, কাজে অংশ গ্রহণকারি Sheer Vintage Solution and Kilobite IT ltd এর কারিগরি স্কোর ছিলো ৮০ এর মধ্যে ৭৪.৪০ আর্থিক স্কোর ছিলো ২০ এর মধ্যে ১৩.৮৮ আর B2M Tecnologies Ltd এর কারিগরি স্কোর ছিলো ৮০ এর মধ্যে ৫৯.২০ আর আর্থিক ছিলো ২০ এর মধ্যে ২০।
এ কাজের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থের পরিমান হচ্ছে ৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এখানে সির ভ্যানটেজ তাদের কাজের জন্য ব্যয় প্রদর্শন করে ৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। একই কাজের জন্য বি ২এম ৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা দাখিল করে। কাজের সর্বনিম্ম দরদাতা হিসেবে বি২এমকে কাজ দেয়া হয়।
এখানে কারিগরি দক্ষতায় অনেক বেশী এগিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠান সির ভিনটেজের সাথে কোন প্রকার নেগোসিয়েশনে যায়নি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পিপিআর ১২২ বিধি মোতাবেক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে ডিপিপি প্রকল্লিত ব্যয় কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে পারতো। কিন্তু তা করা হয়নি।
পিপিআর ১২২ রাখা হয়েছে, এই নেগোসিয়েশনের জন্যই। নেগোসিয়েশন হতে হবে ১ম ও সর্বশেষ দর দাতার সাথে। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। কাজটি কারিগরি দক্ষতা বিষয়ক। সে ক্ষেত্রে সির ভিনটেজ এর কারিগরি দক্ষতাকে মূল্যায়নে নেয়া জরুরী ছিলো। প্রকল্প পরিচালক ইচ্ছে করেই তা করেননি।
দুদকের ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সির ভিনটেজ এর কাছ থেকে যে সার্ভিস পাওয়ার সুযোগ ছিলো বি ২এম এর কাছ থেকে তা পাওয়ার সুযোগ নেই। এ সকল বিষয়ে আরো অধিক তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে মত দেয়া হয় ঐ প্রতিবেদনে।
#