দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
শ্রম মন্ত্রণালয়ের মজুরী কর্তনের নোটিশ রদ ও রহিত করার দাবীতে এডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান ও এডভোকেট ড.উত্তম কুমার দাস লিগ্যাল নোটিশ পাঠিযেছেন।
রোববার (৭ জুন) নোটিশ দাতা দুই আইনজীবী এডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান ও এডভোকেট ড.উত্তম কুমার দাস গণমাধ্যমে এই নোটিশটি পাঠিযেছেন।
নিম্মে তাদের পাঠানো নোটিশটি হুবহু প্রকাশ করা হলো:
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে ১০ মে ২০২০ ইং তারিখে জারী করা একে তর্কিত (Impugned) আদেশে (যার সুত্র নং-৪০.০০.০০০০.০৪২ ৯৯.০০১.১৮-৭১) অন্যান্যের মধ্যে বলা হয়ঃ
“২) ক) এপ্রিল-২০২০ মাসে যে সকল শ্রমিকগণ সম্পূর্ণ মাস কাজ করেছেন তারা পূর্ণ মাসের বেতন-ভাতা পাবেন। যারা কাজ করেননি তারা মোট বেতন ভাতার ৬৫ শতাংশ পাবেন …।”
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উক্ত আদেশ জারী করাকে সংবিধান ও এইক্ষেত্রে প্রযোজ্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর সংশ্লিষ্ট বিধানের লঙ্ঘন এবং আইনগত ক্ষমতা বহির্ভূত আখ্যায়িত করে তর্কিত আদেশটি বাতিল ও রদ করার দাবীতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে ই-মেইল ও রেজিস্ট্রি ডাকযোগে (যথাক্রমে ২ ও ৩ জুন ২০২০) এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশদাতা হলেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট মিঃ আবদুল্লাহ আল নোমান। তাঁর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে এই নোটিশ প্রেরণ করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট ড.উত্তম কুমার দাস।
মহান সংবিধান ও আইন মান্য করা ও নাগরিক দায়িত্বপালন করার বাধ্যবাধকতায় জনস্বার্থে এই লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, তর্কিত আদেশের মাধ্যমে এপ্রিল মাসে শ্রমিকদের ৬৫% মজুরী প্রদানের যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা একতরফা, বে-আইনি এবং আদেশদানকারীদের আইনগতক্ষমতা বহির্ভূত। এহেন আদেশদান সংবিধানের সংশ্লিষ্ট বিধান (বিশেষতঃ অনুচ্ছেদ ১৪, ১৫, ১৯, ২১, ৩১, ৩২ ও ৪০) এবং শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের পরিপন্থী।
শ্রম আইন মহান সংসদে পাশ হওয়া একটি বিশেষ আইন। এর বিদ্যমান কোন বিধানের ব্যত্যয় সরকারী কোন আদেশ বা নির্দেশের দ্বারা কার্যকর করা যাবেনা। কোন শ্রমিকের নির্ধারিত মজুরী থেকে থেকে কোন কর্তন করতে হলে তা আইনের ১২৫ ধারার বিধানের আলোকে করতে হবে। তর্কিত আদেশের দ্বারা এপ্রিল মাসের বেতন-ভাতার (মজুরী) ক্ষেত্রে ৬৫% পরিশোধের যে আদেশ তা উক্ত ১২৫ ধারার বিধানের পরিপন্থী।
নোটিশ গ্রহিতাদের এহেন আদেশদানের কোন আইনগত ক্ষমতা নেই। এর মাধ্যমে উক্ত শ্রম আইনের ১২০, ১২১, ১২২ ও ১২৩ ধারার বিধানকেও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। শ্রম আইনে নুন্যতম মজুরী পরিশোধের যে বিধান রয়েছে তর্কিত আদেশের মাধ্যমে তারও লঙ্ঘন হয়েছে বলে লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে সরকার ২৪ মার্চ ২০২০ ইস্যুকৃত নোটিশের মাধ্যমে ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি কার্যকর করে; যা টানা ৩০ মে ২০২০ পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এই সময় লোকজনের বাইরে যাওয়া এবং গনপরিবহনের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল। তাই এই সময় যদি কোন শ্রমিক ও কর্মচারী তাঁর কর্মস্থলে না যেতে পারে তা তাঁর ইচ্ছাকৃত নয়।
এটি পরস্থিতিগত। তাই সেই কারণে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মজুরী থেকে কর্তন বে-আইনি হবে। আর এর জন্যই সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছেন। অন্য নোটিশ গ্রহিতাগণ হলেন- (১) সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, (২) মহাপরিদর্শক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, এবং (৩) উপ-সচিব (আইন শাখা), শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়- যিনি তর্কিত আদেশে স্বাক্ষরকারী। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।