দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুনীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, অপসারণের পর দুদকের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা তিন বিভাগীয় মামলা স্থগিত রয়েছে, তারপরও তিনি আজ দুদকে কেন আসলেন জানেন না ।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) বিকেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বিভাগীয় মামলার বিষয়ে হাজিরা শেষে গণমাধ্যমকে মো. শরীফ উদ্দিন বলেছিলেন, আমার কাছে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতি যে দুদকের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে হাজিরা দিতে এসেছি। আপনারা জানেন গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য আমি অপসারিত হওয়ার পরও বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিচ্ছি। এটা আইনের দৃষ্টিতে কতটুক সাম্য আমি বলতে পারব না। তবে এটা নিয়ে আমি বিব্রত। আমার বিরুদ্ধে তিনটি ডিপি চলমান রয়েছে। প্রথমটা হলো ব্যাংক হিসাব নো-ডেবিট সংক্রান্ত, দ্বিতীয়টা নথি হস্তান্তরে বিলম্ব কেন ও তৃতীয়টা হলো দেরিতে কর্মস্থলে যোগদান কেন?
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, শরীফ উদ্দিনকে বিদ্যমান বিধানে আলোকে অপসারণ করার পর তার বিরুদ্ধে তিনটি বিভাগীয় মামলা চালু ছিল। যেহেতু তিনি অপসারিত হয়েছেন সেহেতু কমিশনের সিদ্ধান্তক্রমে তিনটি বিভাগীয় মামলা স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি আমার কাছে আসেননি, আমি জানি না কোথায় এসেছে বা কি কারণে এসেছেন। বিষয়টি জানতে হবে, তিনি কেন আসলেন। বিভাগীয় মামলা যেহেতু স্থগিত করা হয়েছে ওই সংশ্লিষ্টতায় তো আসার কথা নয়।
প্রভাবশালীদের চাপেই তাকে অপসারণ করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা কমিশনের অবস্থান বিস্তারিতভাবে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করেছি। পরবর্তীতে নতুন কোনো ঘটনা বা পয়েন্ট আমার কাছে নেই আপনাদের বলার মতো। যেটি উপস্থাপন করা হয়েছে সেটি। উনি প্রতিকার চাইতেই পারেন। সেই বিষয়ে কমিশন দেখবে।
৫৪ (২) ধারা নিয়ে কোনো আশ্বাস আপনার কাছে আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুদকের মাসিক সমন্বয়সভা গতকাল হয়েছে। সেখানে সব স্তরের কর্মকর্তারা ছিলেন। বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারাও সংযুক্ত ছিলেন। কাল ও বলেছি, আগেও বলেছি যে, আপনারা নির্ভয়ে যার যার দায়িত্ব পালন করবেন, কাজ করবেন।
এখানে ভয়ের কিছু নেই। আর ৫৪ (২) ধারা বিধিতে ছিল। বর্তমান কমিশন এটা নতুন করে যোগ করেননি। আদালতে বিষয়টি নিয়ে অবতারণা হয়েছে। কাজেই এটি নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে মতামত দিতে চাই না।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে অপসারণ করার কথা বলা হয়।
পরদিন কমিশনের প্রধান কার্যালয়সহ ২১ জেলায় দুদকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওই বিধি বাতিল এবং অপসারণের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেন।
এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন শরীফকে অপসারণের ১৩টি কারণের কথা জানান।