দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
এলসির বিপরীতে ঋণের ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিমিয়ার নিটওয়্যার লিমিটেড, প্রিমিয়ার ওয়াশিং প্লান্টের মালিক ও সোনালী ব্যাংকের বরখাস্ত হওয়া শাখা ব্যবস্থাপকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৩১ আগস্ট) দুদকের নারায়ণগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটি উপ-সহকারী পরিচালক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা নিয়মের তোয়াক্কা না করে এলসির বিপরীতে ঋণের ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিতও হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের যাত্রা শুরু হওয়ার পর এটিই প্রথম মামলা। প্রথম মামলায় ৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ও দ্বিতীয় মামলায় ২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- মেসার্স প্রিমিয়ার নিটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের তাওয়ার, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মিসেস শামীমা ইয়াসমিন ও সোনালী ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার (নারায়ণগঞ্জ) বরখাস্ত হওয়া ব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করেছেন। তারা লিমিট ও মেয়াদ অতিক্রম ও আমদানি করা কাঁচামালের মজুত নিশ্চিত না করেই পিএসসি ঋণ বিতরণ করেন। অফিস নোট অনুমোদন ছাড়াই ঋণ বিতরণ করেন এবং বিল আদায়ের লক্ষ্যে বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি।
এতে আরও বলা হয়, যেখানে শাখা ব্যবস্থাপকের ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে বিটিবি ঋণপত্র খুলে গ্রাহকের ফোর্স লোন দায় থাকা সত্ত্বেও নতুন নতুন বিটিবি এলসি খুলে ও পুনরায় ফোর্স লোন সৃষ্টি করেন। দুদক অনুসন্ধান করে জানতে পারে প্রতিষ্ঠানটি মালামাল তৈরি করে রপ্তানি করার কথা থাকলেও রপ্তানি করেনি।
মালামাল তৈরি না করার ফলে বেনিফিশিয়ারি ব্যাংক বিটিবি এলসির মূল্য ফোর্স লোন সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে তা পরিশোধ করে নিজেরা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার মাধ্যমে ৭৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫২১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অন্য মামলায় মেসার্স প্রিমিয়ার ওয়াশিং প্লান্টের মালিক আবু নাসের আজাদ ও সোনালী ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার (নারায়ণগঞ্জ) বরখাস্ত ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সামাদকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঋণ মঞ্জুরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে এলসি ইস্যুর আগেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ না করে ও শাখা ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে টাকা আদায় না করে রপ্তানির ডকুমেন্টস ছাড় করে।
জামানত ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত ঋণপত্র শূন্য মার্জিনে শাখা ব্যবস্থাপকের ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে আসামিরা ২১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫৭ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধান প্রমাণিত হয়েছে।
#