দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন , ‘রেফারেন্স থাকলে প্রিফারেন্স পাওয়া যায়”। তিনি বলেন, এই সংস্কৃতির অবসানের জন্যই দুদক পল্লী অঞ্চলে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫টি দুর্নীতি বিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। যাতে তৃণমূলে পর্যায়ের মানুষ তদবির ছাড়া সরকারি পরিষেবা পেতে পারেন। দুদক সেই লক্ষেই কাজ করছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সেগুনবাগিচায় আর্ন্তজাতিক এন্টিকরাপশন এন্ড গভার্ননেন্স বিশেষজ্ঞ ‘KAREN HUSSMANN Gi’ এর নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের সাথে এন্টিকরাপশন এন্ড গভার্ননেন্স ইস্যু নিয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদক প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনি প্রক্রিয়ায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কমিশন দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি প্রতিরোধ, সরকারি পরিষেবা প্রদানে বিজনেস প্রসেস রি-ইঞ্জিনিয়ারিং এবং তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে গণশুনানিসহ বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন , দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনাায় উপকারভোগী জনগণকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে এ ব্যবস্থাপনায় সংস্কার প্রত্যাশা করে। কারণ কমিউনিটি সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণই প্রকল্পকে জনবান্ধব কার্যক্রমে পরিণত করতে পারে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, উপকারভোগীদের প্রকল্পের প্রতি মমত্ববোধ ও আমিত্ব সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রকল্প ব্যবস্থাপনা চক্রে অবশ্যই সিভিল সোসইটির প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া সমীচীন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সোস্যাল অডিট হতে পারে প্রকল্পের স্বচ্ছত ও জবাবদিহিতার অন্যতম কৌশল।
তিনি বলেন, উন্নয়ন টেকসই করতে হলে নৈতিকমূল্যবোধ সম্পন্ন মানসম্মত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শুধু সার্টিফিকেট নির্ভর শিক্ষা দিয়ে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অর্জনও কঠিন। সক্ষম ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা না গেলে বিশ্ব অর্থনীতি যে ১১ রাষ্ট্রের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে-তা ধরে রাখাও কঠিন চ্যালেজ্ঞ হবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অনেক কাজ করছে। দুদক দেশের ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে সততা ও নৈতিকমূল্যবোধ গ্রোথিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, দুদক সারাদেশে তরুণদের মাঝে এই বার্তার দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এই দেশের গর্বিত মালিক এবং আমারা দেশকে ভালোবাসি।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন উন্নয়ন সহযোগী বা কোনো সংস্থার কাছে কখনই কোনো আর্থিক সহায়তা চায় না, কমিশন চায় জ্ঞান, দক্ষতা, কৌশল, অভিজ্ঞতা এবং দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষা উপকরণ।
প্রতিনিধি দলটির এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক শুধু চুঁনোপুটি কিংবা মধ্যম মানের দুর্নীতিবাজদের ধরছে না বরং অনেক রুই-কাতলাকেও ধরছে। আমলা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ যার বিরুদ্ধেই অভিযোগ পাচ্ছে তাকেই জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসছে। এখন আর কেউ নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে ভাবার সাহস পাচ্ছেন না।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের মামলায় অনেক রুই-কাতলা কারাগারে আছেন, অনেকে আদালতে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন, অনেককেই দুদকে এসে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। আরো অনেককেই আসতে হবে।
টিআই বাংলাদেশের সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যানের মূল্যায়ন জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিআইবি’র কার্যক্রম প্রশংসনীয়। এটি দুদকের কৌশলগত সহযোগী। তবে আমার কেন যেন মনে হয়, সরকাির প্রতিষ্ঠানের ভাল কাজকে প্রশংসা করতে টিআইবি কার্পণ্য করে।
টিআইবির সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও করা উচিত। # কাশেম