দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত ১২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে কেবল জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলেই প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০। এছাড়া এখনও সেখানে শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। খবর বিবিসির।
সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ইউরোপে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিম জার্মানির বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবারও জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রাখেন।
শুক্রবার বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বেলজিয়াম অন্তত ২২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ এবং সুইজারল্যান্ডও। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে গত কয়েক দশকে এমন বন্যা দেখা যায়নি। জার্মানির রাইনল্যান্ড-পালাটিনাটে এবং নর্থ রাইন-ভেস্টফালিয়া প্রদেশ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, নেদারল্যান্ডসের বন্যা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক।
জার্মানির পত্রিকা বিল্ড এই বন্যাকে ‘ফ্লাড অব ডেথ’ নামে অভিহিত করেছে। দেশটির বাসিন্দারা আচমকা এমন ভয়াবহ বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েন। কোনো কোনো অঞ্চলে রাস্তা এবং ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর রাস্তায় গাড়ি উল্টে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কয়েকটি জেলা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
জার্মানির রাইনল্যান্ড-প্যালেটিনেট প্রদেশের ব্যাড নিউইনাহরের ২১ বছর বয়সী ডেকোরেটার অ্যাগ্রোন বেরিশা বার্তাসংস্থা এএফপি’কে বলেন, ‘১৫ মিনিটের মধ্যে সবকিছু পানির নিচে তলিয়ে যায়। আমাদের ফ্ল্যাট, আমাদের অফিস, আমাদের প্রতিবেশিদের বাড়িঘর, সবকিছু পানির নিচে ছিল।’
হান্স-ডিয়েটার ভ্রানকেন নামে ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা এখানে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস করছি এবং আগে কখনও এমন পরিস্থিতির শিকার হইনি।’
রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রজার লেওয়েন্টজ জার্মান পত্রিকা বিল্ডকে জানিয়েছেন, মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে নিখোঁজদের তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় আরভাইলার জেলার কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ১৩০০ মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শুল্ড নামে একটি গ্রাম প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট-এ জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। কোলোনের কাছে এরফস্টাট-ব্লেজেম শহরে একসাথে অনেকগুলো বাড়ি ধসে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়া ফিরে ফিরে আসার ঘটনা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে একটি একক ঘটনাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলাটা একটু জটিল।#