দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, রাষ্ট্র আমাদের দুর্নীতি দমনে কাজ করার ম্যান্ডেট দিয়েছে। এই কাজটিই যেন আমরা স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে করি; প্রজ্ঞা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে যেন আমাদের দায়িত্ব পালন করি; দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে দুদক যেন যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
শনিবার (২৬ মার্চ ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান,কমিশনার (তদন্ত) মহোদয় জহুরুল হক । এছাড়া উপস্থিত ছিলেন , দুদক মো. মাহবুবু হোসেন, এবং সকল অনুবিভাগের মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালক, উপ পরিচালক ও সহকারী পরিচালকগণ। এছাড়াও ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন দুদক বিভাগীয় ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভার শুরুতেই পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম। অতঃপর, মহান মুক্তিযুদ্ধের আত্মদানকারী সকল শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ মহান স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট ও আমাদের করনীয় বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমরা এই মহান স্বাধীনতা এক দিনে অর্জন করিনি। নির্যাতিত বাঙ্গালীর মুক্তির দাবীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আজীবন আন্দোলন, সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মহান ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক আন্দোলন , সংগ্রামের ফসল আমাদের এই মহান স্বাধীনতা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বাঙ্গালীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছিল। ছেষট্টির ৬ দফার মধ্যেই মূলত মহান স্বাধীনতার দাবী নিহিত ছিল। এই ৬ দফার মূল দাবীগুলো সত্তরের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল যার ম্যান্ডেট নির্বাচনের ফলাফলে প্রতিফলিত হয়।তারই ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছিল। আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হতে পেরেছি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা স্বাধীন হয়েছি। এখন আমাদের দেশের মানুষের সকল প্রকার সামাজিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে মুক্তির সংগ্রামে শামিল হতে হবে। আমরা যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সু্যোগ পাইনি তাদের জন্য এটাই মুক্তিযুদ্ধ; তাদেরকে এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বলিষ্ঠ ভূমিকা ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে হবে। তবেই আমাদের এই স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর ডাক সার্থক হবে ।
তিনে আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হতে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুদকের সকলকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এই প্রত্যাশায় জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলে চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, মহান স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল দুর্নীতি, শোষণ ও বৈষম্য থেকে মুক্তি লাভ। সেজন্য স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে সেই ভাবে জীবন যাপন করতে হবে; আচরণে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে; শুধু বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমাদের স্বাধীনতা অর্থবহ হোক, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করুক এই আশাবাদ পোষণ করে এবং ‘জয় বাংলা’ বলে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
কমিশনার (তদন্ত) মহোদয় জহুরুল হক বলেন, বিশ্বের কোনো দেশ এত অল্প সময়ে বাংলাদেশের ন্যায় অর্থনৈতিক উন্নতি অর্জন করতে পারে নি। তবে দুর্নীতির সুচকে আমরা এখনো আশানুরুপ অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দুর্নীতিকে কখনো প্রশ্রয় দেন নি। তিনি আজীবন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি বলেন , বঙ্গবন্ধুর কথাগুলো আমাদের জানতে ও মানতে হবে। তা না হলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে না। সকলে মিলে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশগুলো মেনে চলব এই আহবান জানিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলে তিনি তাঁর বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
এছাড়া, মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করেন দুদকের মহাপরিচালক, বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালকগণ। বক্তাগণ তাদের বক্তব্যের শেষে জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলে তাদের বক্তব্য সমাপ্ত করেন।