দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, সিপিবিসহ বেশ কয়টি রাজনৈতিক দলের নেতারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে অনেকে করোনা পরিস্থিতিতে জনগণের মাঝে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ এবং মৃতদের লাশ দাফন করতে গিয়েও আক্রান্ত হয়েছে। অনেকে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় ইউনিটে চিকিৎসাধীন । আবার অনেকে ইতোমধ্যে আক্রান্ত নেতাদের মধ্যে বেশ কয়জন সুস্থ হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল করোনায় আক্রান্ত। মোহাম্মদ নাসিম হাসপাতালে ভর্তি হলেও নাদেল বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২১ মে করোনাভাইসে আক্রান্ত হন শফিউল আলম নাদেল। তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ। বুধবার (৩ জুন) তার দ্বিতীয় করোনা টেস্টের রেজাল্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে।
বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে ৫ জনের নমুনা টেস্টে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরা হলেন—শহীদুজ্জামান সরকার (নওগাঁ-২), এবাদুল করিম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫), মোহাম্মদ নাসিম (সিরাজগঞ্জ -১), এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী (চট্টগ্রাম -৬) , ফরিদুল হক খান দুলাল (জামালপুর-২)। শহীদুজ্জামান সরকার ও ফজলে করিম চৌধুরী এরইমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ভালো আছি। আল্লাহ ভালো রাখছেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার ভাই মারা গেছে। সে জন্য আমি এখন চট্টগ্রাম এসেছি।’
সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান বলেন, ‘ইসলামপুরবাসীকে করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য যে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করেছি, দুঃখের সঙ্গ বলতে হচ্ছে , আমিসহ আমার প্রায় সব মূল নেতার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আমার সব নেতাকর্মীই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইসলামপুরের নিরীহ সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে অবিরাম কাজ করেছেন।
আজ তারা সবাই রিপোর্ট পেয়ে ঘরবন্দি।’ তিনি বলেন, ‘ঘরে বসেই সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য এবং করোনা সংক্রমণের সংবাদে ভেঙে না পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। আল্লাহ্র রহমতে এবং ইসলামপুরবাসীর দোয়ায় আমি এখন পর্যন্ত বেশ ভালো আছি। রিপোর্টে পজিটিভ আসা নেতাকর্মীদের ফোনে খোঁজ নিয়েছি। তারাও মানসিকভাবে ভীষণ শক্ত আছেন। তাদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রেজ্জাক খান ও তার স্ত্রী, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতা ও নারায়ণগঞ্জের সিটি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যকে জানান, আবদুর রেজ্জাক খান ও তার স্ত্রী শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জের সিটি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ শুরু থেকে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ দাফন করে ব্যাপক আলোচনা আসেন। সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে তিনি করোনায় মারা যাওয়া ৪৯ জনের লাশ দাফন করেন। বর্তমানে মাকসুদুল আলম খন্দকার ও তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক রুবেল, তার মা এবং মেয়ে করোনায় আক্রান্ত। এছাড়া সারা দেশে দলটির ৩৬ জন নেতাকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স গণমাধ্যকে বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের দলের ৩৬ জন নেতাকর্মী করোনা আক্রান্ত। এদের কেউ ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে, কেউ গার্মেন্ট শ্রমিকদের দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।’
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মনজু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি জানান, তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে শরীর এখনও দুর্বল। বর্তমানে বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। # কাশেম