দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক :
নানা অনিয়ম , দুর্নীতি ও জনগণকে হয়রানীর ব্যাপক অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুদক। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুদকের অভিযানকালেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িত ৬ জনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। তিনি জানান, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে হটলাইন ১০৬ এ অভিযোগ আসে, উল্লিখিত হাসপাতালে পেয়িং এবং নন পেয়িং উভয় ক্যাটাগরির সিট বুকিং এর জন্য স্টাফদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে হয়। নন পেয়িং সিট খালি থাকা সত্ত্বেও বরাদ্দ দেয়া হয় না, বরং এর জন্য কমপক্ষে দুই থেকে তিন হাজার টাকা প্রদান করতে হয়।
এছাড়া হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়, সিসটার, আয়া, সুইপার, ট্রলিবয়- প্রত্যেককে পৃথকভাবে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা বকশিশ দিতে হয়; যা না দিলে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় রোগী এবং তার স্বজনদের।
দুদকের সহকারী পরিচালক শারিকা ইসলাম এবং উপসহকারী পরিচালক মোঃ সহিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত পুলিশসহ ৫ সদস্যের টিম রাজধানীর মহাখালীস্থ বক্ষব্যাধি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে দুদক টিম ছদ্মবেশে হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
অভিযোগ সমূহের বিষয়ে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে টিমের একজন সদস্য নিজে রোগীর স্বজন পরিচয়ে হাসপাতালে সিট বুকিং করতে চাইলে তাঁর নিকট বাড়তি অর্থ চাওয়া হয়। সদস্যগণ তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের পরিচালক-কে বর্ণিত পরিস্থিতি অবগত করেন।
হাসপাতালের পরিচালকের উপস্থিতিতে এক ওয়ার্ডবয়ের নিকট বেশ কিছু পরিমাণ অনৈতিক উপায়ে অর্জিত অর্থ পাওয়া যায়। হাসপাতালের পরিচালক অধ্যক্ষ ডাঃ মোহাম্মদ সাহেদুর রহমান খান জরুরী সভার মাধ্যমে প্রাপ্ত অনিয়মসমূহের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে দুদক টিমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি দুদকের পরিদর্শনে যাদের সরাসরিভাবে দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ, আউটডোর ও ইমারজেন্সিকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রশাসনিক তদারকি ব্যবস্থা জোরদারকরণ, রোগীদের অভিযোগ গ্রহণ করার জন্য হাসপাতালের বিভিন্ন দৃশ্যমান স্থানে অভিযোগ বাক্স স্থাপন ও টেলিফোন নম্বর প্রদর্শন সহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রদান করেন।
এছাড়াও সিলেটে ভূমির পর্চা প্রদানে সরকার নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে, কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এ কম্পউটার ক্রয় ও মেরামত খাতে বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগে।
বন বিভাগ, গাজীপুর এর এক বন প্রহরীর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও রাজস্বের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যথাক্রমে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট এবং সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-২ হতে ৪টি পৃথক অভিযান পরিচালিত হয়েছে।#