দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
রাজধানীতে ভয়াবহ যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। সোমবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োাজিত “অসহনীয় যানজট: সমাধান কী” শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় রাস্তা দখল করে দোকান-পাট বসানো হয়েছে। আবার রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। যা ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম কারণ। যারা রাস্তার উপরে গাড়ি রাখবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের নিকট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা হস্তান্তার করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিটি কর্পোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট বানিয়েছে, সাবওয়ে নির্মাণ করেছে। আমাদের দুই সিটি কর্পোরেশন অনেক দায়িত্ব পালন করছে। দুই মেয়রের কাজ করার অনেক আগ্রহ রয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার সক্ষমতা আছে কি না তা দেখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, ট্রাফিক জ্যাম বিশ্বের সকল দেশেই আছে। অনেক দেশ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যেভাবে ট্রাফিক জ্যাম সমাধান করেছে। সেভাবে তো আমাদের রাজধানীতে ব ট্রাফিক জ্যামের সমাধান করা সম্ভব নয়। কারণ তাদের দেশের চিত্র আর আমাদের দেশের চিত্র এক না। সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে সবার আগে এরপর সমাধান খুঁজতে হবে। আমরাও বসে নেই। এনিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, রাস্তা না রেখে শুধু বড় বড় বিল্ডিং করলে এবং ব্যাক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়লে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহী করতে হবে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বলছে এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গাড়ির গতি মানুষের হাটার চেয়েও কম হবে।
তিনি বলেন, ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসন করা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। সমন্বিতভাবে কাজ করলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এক্ষত্রে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ করতে হবে। ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে মানুষকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার লোক বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো তাদের মূল শহরে বসবাসের কস্ট বাড়িয়েছে। এতে করে মানুষজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকে এবং সকাল বেলা কর্মক্ষেত্রে চলে আসে। ঢাকায় থাকার লিভিং কস্ট এবং গ্রামে থাকার লিভিং কস্ট যদি প্রায় সমান হয়, তাহলে ইনকাম এবং সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার মানুষ আশায় ঢাকায় আসবে এটাই স্বাভাবিক। জোন ভিত্তিক পানি, গ্যাস, হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করার কথা আমি প্রায় বলে থাকি। কিন্তু এটা নিয়ে কেউ কথা বলে না।
ডুরার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বয়েটের পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক। নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। #