দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম বলেছেন, কমপ্লায়েন্স না মেনে উন্নয়ন কাজ ও ব্যবসা করলে তাকে অবশ্যই তাকে জরিমানার আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, রাজধানীতে পরিবেশের জন্য হুমকি হতে পারে এমন কোনো ব্যবসা চলতে দেয়া হবে না। এখন থেকে আইন না মানলেই শুধু ফাইন ফাইন আর ফাইন করা হবে। যার শুরু করা হবে ২০ ডিসেম্বর থেকেই।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অনিয়ন্ত্রিত দূষণে ঢাকা:নাগরিক ভাবনা’শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মেয়র আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
রাজধানীর সেবাখাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা ইউটিলিটি রিপোটার্স এসোসিয়েশন (ডুরা) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ডিএনসিসির মেয়র একই সাথে আইন অমান্যকারী ও উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পাদনকারীদের বিরুদ্ধে এ হুশিয়ারী দেন। রাজধানীর পরিবেশ দূষণ করে যারা সড়কে ও যত্রতত্র ইট, বালু,পাথর ও সিমেন্ট রাখবেন তাদেরকে ভালবাসার দিন শেষ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি সভাপতি মশিউর রহমান খান ও সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান খান।
অনুষ্ঠনে মূল প্রবন্ধে বলা হয়,শব্দ দূষনের প্রভাব সম্পর্কে অবগত হওয়ার সময় এসেছে। এই শহরে ৭০ ভাগ মানুষ বিষন্নতায় ভুগে। বিষন্ন নগরি উন্নয়নের রোল মডেল হতে পারেনা। ঢাকা পরিকল্পনার মধ্যে অনেক কিছু আছে কিন্তু বাস্তবায়ন নেই।
আইন প্রয়োগের অভাব,রয়েছে সুশাসনের অভাব। স্যোশাল ইমপ্যাক্ট এসেসম্যান্ট করে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। স্যোশাল ইমপ্যাক্ট এসেসম্যান্ট করে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। মেয়রকে নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে এই দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবেশ আগে না উন্নয়ন আগে এই তর্ক এখন অহেতুক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম ঢাকা ইউটিলিটির আয়োজনকে একটি সুন্দর প্লাটফর্ম হিসেবে অবিহিত কওে বলেন, আজকের এই আয়োজন থেকে আমাদের শপথ নিতে হবে।যারা ব্যবসা করছেন তাদের বলতে চাই, যেই ব্যবসা পরিবেশ ধংস করে তাদের আমরা সিটিতে ব্যবসা করতে দিবো না।
নিয়ম নীতি মেনে ব্যবসা করতে হবে। রাস্তায়ায় যারা ব্যবসা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছি। আগেই এ কাজ চলমান থাকলেও ২০ ডিসেম্বর থেকে নতুন করে কার্যকর করা হবে।
বর্তমানে রাজধানীতে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ পরিচালনায় রাজউক,ওয়াসা, পিডিবি সহ আমাদের সিটি কর্পোরেশনের কন্ট্রাক্টররা যারা রাস্তা খোঁড়ার কাজ করছেন তারা অবশ্যই কমপ্লায়েন্সের মাধ্যমে কাজ করুন,অন্যথায় জরিমানা করা হবে। কাউকেই কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির অভ্যন্তরে নতুন ১৮ টি ওয়াডে পরিকল্পনায় যাতে কোন রকমের অব্যবস্থাপনা না থাকে সেজন্য নগর পরিকল্পনাবিদের কাছে এর নির্মাণ নকশা চাওয়া হয়েছে। এগুলো উন্নত এবং আধুনিক নগর ব্যবস্থার রুপ দিবে।
তিনি বলেন, ইট ভাটা করুন তবে কমপ্লায়েন্স মেনে করতে হবে। প্লাস্টিকের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করে এবং হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনারা একটা পদ্ধতি বের করুন যেন প্লাস্টিকের বোতলটি ফেরত দিলে যেন তাকে পে করা হয়।
তিনি বলেন, রাস্তায় অথব্য অন্য কোথাও যদি প্লাস্টিক পাই তাহলে প্রয়োজনে কিন্তু সেই কোম্পানিকে আমি জরিমানা করবো।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন,উন্নয়ন হবে কমপ্লায়েন্স মেনে এ হোক বিজয়ের মাসের অঙ্গীকার। যারা ব্যবসা করছেন তাদের বলতে চাই, যে ব্যবসা পরিবেশ ধংস করে তাদের আমরা সিটিতে ব্যবসা করতে দিবো না। নিয়ম-নীতি মেনে ব্যবসা করতে হবে।
যারা সড়ক ও ফুটপাতে নির্মাণসামগ্রী রাখছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পরিবেশের জন্য হুমকি হতে পারে এমন কোনো ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। ইট ভাটার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে তাই ইট ভাটা ব্যবসায়ীদের কমপ্লায়েন্স মেনে করতে হবে নয়তো তাকে অবশ্যই জরিমানার আওতায় আনা হবে।
মেয়র আতিক বলেন, এসব অভিযান পরিচালনা করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আরও ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছি। যারা পরিবেশ দূষণ করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করছেন তাদের বলতে চাই, আপনারা এমন ব্যবসা বন্ধ করেন।
তবে যদি যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি তাহলেই শহরটা আমরা নিরাপদ করতে পারি। যদিও আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, তা নিয়েই আমাদের কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক আমাদের তেমনটাই দেখিয়ে গেছেন।
পরিবেশ দূষণ রোধ করতে হলে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের ঢাকা সিটি এখন আর মেগা সিটি নেই, এখন এটা গ্যাগা সিটিতে পরিণত হয়েছে।
আলোচনায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড.লেলিন চৌধুরী বলেন,উন্নয়ন করতে গিয়ে আমরা মরণ ফাদ তৈরি করেছি। উন্নয়নের আগে কিছু এসেসম্যান্ট করা প্রয়োজন। হৃদরোগের অন্যতম কারণ এই দূষণ। বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় আমরা সব সময়ই ১ থেকে ৪ এর মধ্যে ছিলাম।
এবারও আছি। প্রতিবছর ২ লাখ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।নগর পার্লামেন্টের ওয়ার্ড পার্লামেন্ট তৈরি হোক। যাতে প্রান্তিক নাগরিকদের উন্নয়নের অন্তর্ভুক্ত করা যায় অনুষ্ঠানে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ঢাকার এক নাম্বার সমস্যা বাড়তি জনসংখ্যা,দ্বিতীয়ত দ্রুত সময়ে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রবণতা। এ থেকে বের হয়ে অঅসতে হবে।
মেয়রের মতো সকল সংস্থাকেই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলেই কেবল অনিয়ন্ত্রিত দূষণ কমানো সম্ভব। আলোচনায় অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ঢাকা বিশ্বের ৭ম জনবহুল শহর। আর উন্নয়ন এখন সংখ্যা তাত্বিক একটি বিষয়ে পরিনত হয়েছে। ইটিপি বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে তৈরি হলেও সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছেনা।
অনুষ্ঠানে নগরবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, শব্দ দূষণে যখন নগরবাসি অতিষ্ঠ তখন শুধু নীতি নির্ধাকরদের শব্দ দূষনের বাইরে রাখার প্রয়াস প্রমান করে আমাদের কাদের হাতে সমর্পিত করা হয়েছে। অবশ্যই সমন্বয়হীন কাজ বন্ধ করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে কোন জনবান্ধন হীন কাজ কর্ম বন্ধ করার দায়িত্ব মেয়রকে নিতে হবে। বায়ু দূষণ ১২/১৪ গুন হারে অসুস্থ করছে সন্তানদের। এই নগরিতে কে কি ব্যবসা করবে, তা কতটুকু পরিবেশ বান্ধব এটা নিশ্চিত করুন। সাবেক মেয়র আনিসুল হক এই কাজটি করেছিলেন বলেই নন্দিত হয়েছিলেন।
তিনি পানি দূষণে ওয়াসার প্রব নার প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, পয়োবর্জ্যরে মাধ্যমে নদীগুলোকে দূষিত করা হয়েছে। # কাশেম