দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, রাজউকের অনুমোদিতপ্ল্যান ও নকশা অনুযায়ী নগরীতে খেলারমাঠ ও পার্কের জমি ছাড় দিয়ে ভবন নির্মাণ করতে হবে। প্ল্যানে খেলার মাঠ ও পার্ক উল্লেখ্য করা সত্বেও বিভিন্ন সময় কিছু হাউজিং কোম্পানি ও ডেভেলপার কোম্পানি পরবর্তীতে ওইসব খেলার মাঠ এবং পার্ক প্লট বানিয়ে বিক্রি করে।
ডিএনসিসি মেয়র আক্ষেপ করে বলেন,’বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি ও ডেভেলপার কোম্পানিগুলো নকশায় মাঠ, পার্ক ও ফাকা জায়গা দেখিয়ে রাজউক থেকে অনুমোদন নেয়। কিন্তু প্লট বিক্রির সময় তারা নকশায় খেলার মাঠ, পার্ক, ওয়াকওয়ে ও বাজার দেখিয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক জায়গার দাম বাড়ায় তারা খেলার মাঠ ও বাজারও প্লট আকারে বিক্রি করে দেয়। আমি ইস্টার্ন হাউজিংকে বলেছি নকশা অনুযায়ী খেলার মাঠ, পার্ক ও কবরাস্থান নির্মাণ করতে হবে।’
রোববার (১০ ডিসেম্বর ) দুপুরে ডিএনসিসির ৬নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় খেলার মাঠ, পার্ক ও কবরাস্থান পরিদর্শনকালে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তাইজুল ইসলাম চৌধুরী (বাপ্পি) প্রমুখ।
মেয়র বলেন, ’আজকে পরিদর্শনে এসে দেখলাম জনগণের জন্য একটি পার্ক, কবরাস্থান ও খেলার মাঠ নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশের জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতএব ডেভেলপার কোম্পানিকে নকশা অনুযায়ী মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করতে হবে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার টেকসই উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দ্রুতই ড্রেনেজ, রাস্তা, ফুটপাত ও ব্রীজের কাজ শুরু হবে। এই এলাকায় একের পর এক বড় বড় ভবন নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু আমাদের শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করতে হবে। শুধু ভবন নির্মাণ করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক বিকাশ হবে না। আজ যে পার্ক ও মাঠ পরিদর্শনে আসলাম আগেও আমি এখানে এসেছিলাম। তখন এখানে ময়লার ভাগাড় ছিল, নির্মাণ সামগ্রী রেখে এটি দখল করা ছিল, এখানে গরু লালন পালন করা হতো। দখলমুক্ত করে আজ পার্ক ও খেলার মাঠ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলো। সবাই এখানে খেলাধুলা করবে।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘কবরাস্থান, মাঠ ও পার্ক আজ উদ্বোধন করা হলো। এই জায়গায় ভবিষ্যতে প্লট আকারে বরাদ্দ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আগে যদি বরাদ্দ হয়ে থাকে তাদের অন্য জায়গায় প্লট দিতে হবে। এই এলাকার মালিক সমিতিকে আহবান করবো এগুলো দেখে রাখার জন্য। জনগণ সম্পৃক্ত হলে মাঠ ও পার্ক কেউ দখল করতে পারবে না। ইস্টার্ন হাউজিং কোম্পানিকে অনুরোধ করবো মাঠটির চারপাশে দর্শকরা যেন বসে খেলা দেখতে পারে সেজন্য গ্যালারির ব্যবস্থা করে দিবেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নৌপথ চালুর বিষয় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি মিরপুরের রূপনগর খাল দিয়ে তুরাগ নদী পর্যন্ত নৌপথ চালু করা হবে। রূপনগর খালে মোট ১১টি ব্রিজ রয়েছে সেগুলোকে আর্চ ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে এই পথে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। এই শহরকে বাঁচাতে ন্যাচার বেজড সলিউশন করতে হবে। নৌপথ চালুর মাধ্যমে যানজট যেমন কমবে সেই সাথে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে।’
পার্ক ও কবরাস্থান পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি মেয়র খেলার মাঠেবস্থানীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যকার প্রীতি ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি নিজে ফুটবল খেলে শিক্ষার্থীদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
# একে