দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চালের বড় আড়ৎ, কৃষি মার্কেটে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়েছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু অভিযানের খবর পেয়েই অনেক চাল ব্যবসায়ী দোকান ফেলে পালিয়েছেন। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) ফাহমিনা আক্তারের বারবার অনুরোধেও ওই মাকের্টের চাল ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে ফিরে আসেননি।
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেটে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি টিম। এ সময় মূল্য তালিকায় অসংগতি থাকায় এসএম রাইস এজেন্সি ও আনোয়ার ট্রেডার্স নামে দুই চালের দোকানকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আজ মঙ্গলবার এ মার্কেটে চালের দাম কেন বেড়েছে সেটার খোঁজ নিতে এসেছি’। ‘কিন্তু আমাদের আসার খবর পেয়ে অনেক চাল ব্যবসায়ী দোকান থেকে পালিয়ে যান। পরে তাদের অনেক অনুরোধ করা হলেও তারা আর দোকানে ফিরে আসেননি’।
তিনি আরও বলেন, ‘মূল্য তালিকায় অসংগতি পাওয়ায় এসএম রাইস এজেন্সি এবং আনোয়ার ট্র্রেডার্স নামে দুই দোকানকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে’। ‘তারা আমাদের জানিয়েছেন, চাল যে দামে কেনেন সেখান থেকে দোকান পর্যন্ত আসতে প্রতি কেজি চালে আরও দুই টাকা খরচ পড়ে। পরে এক টাকা (প্রতি কেজি) লাভে ওই চাল বিক্রি করেন দোকানীরা’। তিনি বলেন, ‘অথচ তাদের মূল্য তালিকায় প্রতি কেজিতে ১০-১২ টাকা বেশি দেখা গেছে। এ জন্য দুই চাল ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। আমাদের মূল উদ্দেশ্য জরিমানা করা নয়। আমরা জানতে চাচ্ছি চালের দাম বাড়ার কারণ কি ’।
সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার বলেন, ‘ দোকানিরা অভিযোগ করেন, তারা টাকা দিয়েও চাল পাচ্ছেন না। মিল মালিকরা তাদের বলছেন, ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে চালে। তাছাড়া অনেক ব্যবসায়ী অগ্রিম টাকা দিয়েও চাল পাচ্ছেন না’।
তিনি বলেন, ‘যারা চালের দাম বাড়িয়েছে আমরা তাদের জরিমানা করছি। আবার যারা সঠিক মূল্য তালিকায় চাল বিক্রি করছে তাদের ধন্যবাদ দিই’। ‘শুধু চালের বাজার নজরদারি করছি না, মিল মালিকদের নজরদারিতে রাখার জন্য আমাদের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। আশা করি চালের দাম কমে আসবে’।
এদিকে মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেটের পাইকারি চাল বাজার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের চালের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি মিল মালিকদের। তারা বিভিন্ন অজুহাতে চালের দাম বাড়ি দিচ্ছে। অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখার পরেও আমরা সঠিক সময়ে চাল পাচ্ছি না’।
তিনি বলেন,‘আমরা প্রতি কেজিতে এক টাকা ৩০ থেকে ৪০ পয়সা লাভ করি। আমাদের মধ্যে হয়ত কেউ একটু বেশি দামে চাল বিক্রি করে। তবে তাদের সংখ্যা অনেক কম’। মার্কেটের দোকানিরা কেন পালিয়ে গেলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাই মনে করেছে তাদের জরিমানা করা হবে, এ ভয়েই মার্কেটের চালের দোকান ফেলে তারা পালিয়ে যান’। ‘ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমাদের কাছে চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়েছেন, আমরা তাকে বিষয়টি অবগত করেছি’। #