দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা গেলে দেশে শান্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং টেকশই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, তাছাড়া এসডিজি-৪ বা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা গেলেই এসডিজি’র অন্যান্য এজেন্ডা বা লক্ষ্য সমূহ অর্জন অনেকটা বেগবান ও সফল হবে। কেননা সকল সেক্টেরের জন্য চৌকশ ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করবে মানসম্মত শিক্ষা।
শনিবার ( ১৮ জানুয়ারি): দুপুরে রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ে স্প্রিং সেমিস্টারে নতুন ভর্তিকৃত প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
আইন মন্ত্রী বলেন, ভিশন ২০২১, ভিশন ২০৪১ এবং টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বর্তমান প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরাই আমাদের মূল নিয়ামক। তাদের মেধা, শ্রম আর দেশপ্রেম আমাদের দেশকে নিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার দ্বারপ্রান্তে। তাই আমাদের ছাত্র সমাজকে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।
তিনি বলেন, যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা দিতে হবে। এ শিক্ষা তাদেরকে জ্ঞানী, দক্ষ, নৈতিক ও সৃজনশীল করে গড়ে তুলবে এবং জাতীয়, আ লিক ও বৈশ্বিক সমস্যা সমাধান করে সমাজ ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীল উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সহায়তা করবে।
আনিসুল হক বলেন, কিছু মানুষকে আর্ন্তজাতিক মানের শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করাই মানসম্মত শিক্ষা নয়। মানসম্মত শিক্ষা সকলের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। সরকার মানসম্মত ও বৈষম্যহীন শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। তা সত্তে¡ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা সম্ভব হয়নি।
এর অন্যতম কারণ হলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি, বেসরকারি, এমপিওভুক্ত, নন এমপিওভুক্ত, বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, মাদ্রাসা শিক্ষা সহ বহুরকম শিক্ষা কার্যক্রম চলমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভৌগোলিক অবস্থানের ভিন্নতা, অভিভাবকদের আর্থিক সক্ষমতা, ছাত্র-ছাত্রীর বেতন ও টিউশন ফি সহ অন্যান্য ব্যয়ের ভিন্নতা এবং মানসম্পন্ন শিক্ষকের রকমফেরও বৈষম্যের অন্যতম কারণ।
মন্ত্রী বলেন, শুধু সরকারের পক্ষে সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরা দূরহ ব্যাপার। সরকারের পাশাপাশি সবধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে এগিয়ে আসতে হবে। বিশ^বিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্রভূমিতে থাকতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা হচ্ছে মৌলিক মানবাধিকার। তাই কেবল অর্থের অভাবে কোন মেধাবী শিক্ষার্থী যেন শিক্ষার আলো থেকে বি ত না হয়, সে বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে।
গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আরো অধিক হারে শিক্ষালাভের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ্যের প্রতি আহবান জানান তিনি। এছাড়া যারা আর্থিক সংকটকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, অর্থের অভাবে তাদের পড়ালেখা যাতে মাঝপথে থেমে না যায় সে বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি ।
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের বৃত্তিপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তিপত্র তুলে দেন আনিসুল হক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ এবং ঢাকায় নিযুক্তকানাডিয়ান হাইকমিশনারসহ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। #