দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
এসিড মশার লার্ভা নিধনের ব্যাকটেরিয়া বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস (বিটিআই) আমদানিতে প্রতারণার ঘটনায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়দুর রহমানসহ তিন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২১ আগস্ট) মেয়র মো.আতিকুল ইসলামের নির্দেশে ডিএনসিসির এ তিনজনকে নোটিশ দেওয়া হয়।
ডিএনসিসির সচিব দপ্তর সূত্র জানায়, নোটিশ প্রাপ্ত তিন কর্মকর্তা হলেন- ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বি.জেনা. জুবায়দুর রহমান, প্রধান ভান্ডার কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং সহকারী ভান্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা রাহাত আল ফয়সাল। নোটিশে তাদের আগামী ৭দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট এডিস মশার লার্ভা নিধনের ব্যাকটেরিয়া বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস (বিটিআই) আমদানিতে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজকে কালো তালিকাভুক্ত করে ডিএনসিসি। জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়, সরবরাহকৃত বিটিআই বেস্ট কেমিক্যালের উৎপাদিত এবং সরবরাহকৃত কি না, এ সংক্রান্ত সব প্রমাণ দাখিল ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজকে পরপর দুটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠির বিষয়ে মশক নিধন কীটনাশক ও যন্ত্রপাতি কারিগরি ও যাচাই কমিটির ১৭ আগস্টের সভায় পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরবরাহ করা বিটিআই সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজে উৎপাদিত বলে কোনো প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি মার্শাল অ্যাগ্রোভেট।
ডিএনসিসির অফিস আদেশে আরও বলা হয়, ভান্ডার ও ক্রয় বিভাগের দাপ্তরিক ই-মেইল থেকে সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা জানাযায়, বেস্ট কেমিক্যাল থেকে এসব মাল মার্শাল অ্যাগ্রোভেটকে সরবরাহ করা হয়নি। মার্শাল অ্যাগ্রোভেট তাদের নিযুক্ত পরিবেশক নয়। এছাড়া লি কিয়াং নামের এক ব্যক্তিকে বেস্ট কেমিক্যালের রপ্তানি ব্যবস্থাপক বলে দাবি করা হয়েছিল। তিনি বেস্ট কেমিক্যালের কর্মচারী নন।
এ জালিয়াতির অভিযোগ ও টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ সার্বিক বিষয় তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে বলে ডিএনসিসির অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ কমিটির আহবায়ক ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন। আগামী ১০ দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটির আমদানি করা বিটিআই নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্শাল অ্যাগ্রোভেট দাবি করে, তাদের সরবরাহ করা পাঁচ হাজার কেজি বিটিআই সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদিত। তবে সেটা সত্য নয় বলে জানায় বেস্ট কেমিক্যাল লিমিটেড। এ নিয়ে সিঙ্গাপুরের ওই কোম্পানি নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি সতর্কবার্তাও দিয়েছে।
উল্লেখ্য ‘এডিসের পাশাপাশি সব ধরনের মশা’ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার নামে সিংগাপুর থেকে ৫ হাজার কেজি ‘বিটিআই কীটনাশক’ ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা মূল্যে সরবরাহের কার্যাদেশে নেয় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে সরবরাহকারী এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভয়াবহ জালিয়াতি, প্রতারণা, তথ্য গোপন, নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতি সুনিদষ্ট অভিযোগে তাকে কালো তালিকা ভুক্ত করেছেন ডিএনসিসির মেয়র। # কাশেম