দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
করোনা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত। ভারতের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা সতর্কতা উচ্চারন করেছেন। করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ভারতকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতেও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
মুম্বাইয়ে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা যাওয়ার পরই ভারতের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
মুম্বাইয়ের ব্রিহানমুম্বাই পৌর করপোরেশনের (বিএমসি) এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, মৃত ব্যক্তির বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস ছিল না। স্থানীয় কিরণ দিগাভকর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল তাকে। সেখানে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ ফল আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যান তিনি।
পরে ওই ব্যক্তির পরিবারের আরো কয়েকজন সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং তাদের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এই ব্যক্তি বস্তির যে ব্লকে থাকতেন সেখানে ৩০০ ঘর ও ৯০টি দোকান রয়েছে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে ব্যাপক ঘনবসতিপূর্ণ সেই ব্লক বর্তমানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ব্রিহানমুম্বাই পৌর করপোরেশনের ৫২ বছর বয়সী এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে। এশিয়ার বৃহত্তম মুম্বাইয়ের ধারাবি বস্তিতে ১০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। এই বস্তির প্রতি বর্গকিলোমিটারে মানুষের ঘনত্ব দুই লাখ ৮০ হাজার; যা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের চেয়ে তিন গুণ বেশি।
দেশটির চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারতের অসংখ্য বস্তির একটিতেও যদি করোনার স্থায়ী প্রাদুর্ভাব শুরু হয়; তা হলে পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। কারণ ভারতের বেশির ভাগ বস্তিতে স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া হাজার হাজার মানুষ গাদাগাদি করে সেখানে জীবনযাপন করেন। এসব বস্তিতে সামাজিক দূরত্ব শারীরিক কিংবা অর্থনৈতিকভাবে বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব।
ভারতে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর মুম্বাইয়ের ওই বস্তিতে করোনায় এটি দ্বিতীয় মৃত্যু বলে নিশ্চিত করেছেন ব্রিহানমুম্বাই পৌর করপোরেশনের কর্মকর্তারা। মালবানি বস্তির ৬৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের শরীরে গত মঙ্গলবার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ ফল আসার পর ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের গুরুগ্রামের মেডান্টা-দ্য মেডিসিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান চিকিৎসক নরেশ ত্রিহান বলেন, কোনো বস্তিতে করোনার বিস্তার ঘটছে কি না তা কর্তৃপক্ষের জানাটা গুরুত্বপূর্ণ।
চিকিৎসক নরেশ ত্রিহান বলেন, আমরা এরই মধ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের আলামত পেয়েছি। কিন্তু এটি কিভাবে ছড়াচ্ছে সেটি অজানা। আমরা যে ধরনের প্রস্তুতিই নিই না কেন, যখন এটি একেবারে চূড়ান্ত মাত্রায় সংক্রমণ ঘটাবে তখন কী ঘটবে সেটা ভেবেই আঁতকে উঠি। আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় শয্যা, ভেন্টিলেটর, পিপিইর এক-চতুর্থাংশও নেই। এসব কিছুই দরকার। # সূত্র : সিএনএন