দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মাহজাবীন মোরশেদ ও তার স্বামী মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমসহ চার জনের বিরুদ্ধে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের জামানতবিহীন ৩০০ কোটি টাকার ঋন জালিয়াতি ও আত্মসাতের মামলায় দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন অর্থঋণ আদালত। একই সঙ্গে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের পাসপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।
গত ২৯ জানুয়ারি অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাকি দুজন হলেন- হুমাইরা করিম ও সৈয়দ মোজাফফর হোসেন। দুদকের মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে ১৩৪ কোটি এবং ১৪১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে পরবর্তী সময়ে এলসি খোলার নামে এবং ঋণ হিসেবে এসব অর্থ নেওয়া হলেও তা পরিশোধ করা হয়নি। এছাড়া ঋণের বিপরীতে তাদের কোনো মর্টগেজও নেই।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম। তিনি জানান, ‘আই জি নেভিগেশন’ নামে অভিযুক্তরা জামানত ছাড়া বেসিক ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। খেলাপি হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় গত বছরের ২১ নভেম্বর অভিযুক্তদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে মামলার বাদীপক্ষ। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে অভিযুক্তদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।
ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আরও বলেন, অভিযুক্তরা যেন বিদেশে যেতে না পারেন সেজন্য পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শককে ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ১০ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির নেতা মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী সংসদ সদস্য মাহজাবীন মোরশেদের বিরুদ্ধে বেসিক ব্যাংকের ২৭৫ কোটি টাকা ঋণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুইটি মামলা করেছে। দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সিরাজুল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ৪২০ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুটি মামলা করেন। দুই মামলায় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে দুইজন বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা।
মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি। আর তার স্ত্রী মাহজাবীন মোরশেদ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের (মহিলা আসন-৪৫) সদস্য ছিলেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক সিরাজুল হক গণমাধ্যমকে জানান, ১৩৪ কোটি এবং ১৪১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে পরবর্তী সময়ে এলসি খোলার নামে এবং ঋণ হিসেবে এসব অর্থ নেওয়া হলেও তা পরিশোধ করা হয়নি। এছাড়া ঋণের বিপরীতে তাদের কোনো মর্টগেজও নেই।
১৩৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলাটিতে আসামি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম। তিনি ক্রিস্টাল স্টিল অ্যান্ড শিপ ব্রেকিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বেসিক ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ওই ঋণের আবেদন করেছিলেন। এই মামলার অন্য আসামি বেসিক ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সাজেদুর রহমান। ১৪১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা অপর মামলায় আসামি করা হয়েছে সাংসদ মাহজাবীন মোরশেদকে। তিনি আইজি নেভিগেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ওই ঋণ আবেদন করেছিলেন। এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন আইজি নেভিগেশন লিমিটেড পরিচালক সৈয়দ মোজাফফর হোসেন এবং বেসিক ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম। # কাশেম