দূরবীন নিউজ প্রতিকেদক :
ইতিহাসের জগন্যতম হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে গোটাজাতি ক্ষুব্ধ। আর এই জগন্যতম ঘটনাটি ঘটিয়ছে সরকার সমর্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ । ফলে এই মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবি নিয়ে মাঠে রয়েছেন ছাত্ররা।
তবে আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে মাঠপর্যায়ের আন্দোলনের ইতি টেনেছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
বিকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেয়, আবরার হত্যায় জড়িতদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার না করার আগ পর্যন্ত তারা কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না। তবে মাঠ পর্যয়ের আন্দোলন আপাত:ত স্থগিত করার ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ১০ দফা দাবির মধ্যে ইতিমধ্যেই ছয়-সাতটি কার্যকর করা হয়েছে। বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন বলে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আমরা মাঠপর্যায়ের আন্দোলনের আপাতত ইতি টানলাম। কিন্তু আমরা আমাদের দাবিগুলো পূর্ণ কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করব।এ সময় আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপের প্রশংসা করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
এর আগে আবরার হত্যার বিচার দাবিতে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গনে বৈঠক করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। বৈঠক শেষে বিকাল ৫টার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন তারা।
এর আগে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে গত রোববার ও সোমবার আন্দোলন শিথিল করে মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে আবার জড়ো হন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার আবরার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষরও সংগ্রহ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে গত ৫ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ।
এর জেরে পরদিন ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতিমধ্যে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছেন। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন, অনীক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ইফতি মোশারেফ, বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্না, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, মোহাজিদুর রহমানকে, শামসুল আরেফিন, মনিরুজ্জামান ও আকাশ হোসেন, মিজানুর রহমান (আবরারের রুমমেট), ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা এবং হোসেন মোহাম্মদ তোহা। এদের মধ্যে ১৯ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।#