দূূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কঠোর বিধি নিষেধাজ্ঞার গেরাকলে পড়েছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় গ্রামীণটেলিকম অপারেটর (গ্রামীণফোন) কোম্পানি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর বিধি নিষেধাজ্ঞার ফলে বর্তমানে গ্রামীণফোনের নতুন-পুরনো সব ধরনের সিম বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
প্রথমে গত ৩০ জুন মানসম্মত সেবা প্রদানে ব্যর্থতার অভিযোগে গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় বিটিআরসি। ওই নিষেধাজ্ঞায় গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রি বন্ধ রাখতে বলা হয়। এরপর নতুন সিম বিক্রির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই পুরোনো সিম প্রায় ১৩ লাখ তাদের কাছেই ছিল।’ বিটিআরসি চেয়্যারমান গণমাধ্যমকে আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর গ্রামীণফোনের ৩৪ লাখ গ্রাহক কমেছে। তবে বাজারে তাদের চাহিদা আছে।
গত ৬ নভেম্বর বিটিআরসি’র কার্যালয়ে চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এক অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান । গত সেপ্টেম্বরে গ্রামীণফোন কোম্পানিকে তাদের পুরোনো সিম বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পরে আবার ৬ নভেম্বর সেই অনুমতিও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। গ্রামীণফোনের ওপর কেন এই নিষেধাজ্ঞা, সে ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি বিশেষ কারণে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার ‘মুঠোফোন অপারেটরদের সেবার মান পরিমাপের জন্য নতুন ও অত্যাধুনিক কোয়ালিটি অব সার্ভিস বে মার্কিং সিস্টেম’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে’ এক প্রশ্নের জবাবে গ্রামীণফোন বিষয়ে সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ তুলে ধরেন। গ্রামীণফোনের সিম বিক্রি নিয়ে বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোনো টানাপোড়েন চলছে কি না, তা জানতে চান সাংবাদিকেরা। বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, মন্ত্রণালয় সিম বিক্রিতে একটা নির্দেশনা দিয়েছে। এই সিম বিক্রির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নেওয়ার কোনো বিধান নেই।
তিনি বলেন, বিশেষ ‘কারণটি হচ্ছে, গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। ওইদিন সেখানে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক ভালো ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই সেটা প্রত্যক্ষ করেছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাদের সচিবকে ফোন করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগেও প্রচুর অভিযোগ ছিল এবং এখনো আছে। সেবার মান খারাপ।
এ ছাড়া আদালতে রিটও ছিল। এগুলো বিবেচনায় মন্ত্রী গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রি বন্ধের জন্য বলেছিলেন। এরপর সেনাবাহিনী, পুলিশের কাছ থেকে চাহিদা আসে, তারা সিম চায়। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আছে, নতুন সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু আমি তো নতুন সিম বিক্রির অনুমতি দিইনি। পুরোনো সিম দিয়েছি, রিসাইকেল করার জন্য।
এদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ সেবার মান নিশ্চিত না করা পর্যন্ত গ্রামীণফোন নতুন কোনো গ্রাহক তৈরি করতে পারবে না। তাদের পুরাতন সিম বিক্রির সুযোগে নতুন গ্রাহক তৈরি হচ্ছিল। সেবার মান উন্নত না করতে পারলে গ্রামীণফোন নতুন কোনো গ্রাহকই তৈরি করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, গুণগত মান নিশ্চিত না করায় গত ৩০ জুন গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রি বন্ধ করেছিল বিটিআরসি। তবে, পুরোনো সিম বিক্রি করতে পারত প্রতিষ্ঠানটি। নতুন নির্দেশনার কারণে এখন গ্রামীণফোনের সব ধরনের সিম বিক্রি বন্ধ হলো। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী অপারেটরগুলো সেবা দিতে পারে না। ২০১৮ সালে এবং পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে যে স্পেকট্রাম দেওয়া হয়, তা এখনো রোল আউট করা হয়নি। তাহলে গ্রাহক সন্তুষ্টি কোত্থেকে আসবে, সে প্রশ্ন রয়েছে। #