দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বিদেশে অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) দুদকের পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান,২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর আসামী খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো কর্মকান্ড ও বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় ৫ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলাটি দায়ের করেছিল।
পরে ওই মামলাটি তদন্তকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা দেশ-বিদেশ থেকে সংগৃহীত তথ্যে জানতে পারেন, আসামি খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার নামে মালয়েশিয়ায় গত ২০১৮ সালে ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে হিসাব নং-১৬৪৪৯০৪৫৮০৫৩ খুলে ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯২.৪৭ রিঙ্গিত জমা হয়। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রতি রিঙ্গিত ২০.৫০ টাকা হিসেবে ওই রিঙ্গিতের মূল্য ২ কোটি ২৫ লাখ ২ হাজার ৬৯৬ টাকা।
এছাড়া তার নামে হিসাব নং-১১৪১৩৮০০৫৭০৭৮৯ খুলে ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৪.১৭ রিঙ্গিত জমা হয়। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রতি রিঙ্গিত ২১.৪৫ টাকা হিসেবে ২ কোটি ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৬ টাকা।
একই ভাবে তার নামে এফডিআর নং-৩১৪১৩৮০০৬৪৪৭০৬-তে ১ লাখ ৫০ হাজার রিঙ্গিত এবং এফডিআর নং-৩১৪১৩৮০০৬৪৪৬৯২-তে ১ লাখ ৫০ হাজার রিঙ্গিত করে মোট ৩ লাখ রিঙ্গিত ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এফডিআর করা হয়। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রতি রিঙ্গিত ২০.১৮ টাকা হিসেবে ৬০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
ফলে আসামি খালেদ মাহমুদ ভূইয়া মালয়েশিয়ায় বর্ণিত ব্যাংক হিসাবে রিঙ্গিতের বিপরীতে জমাকৃত মোট ৫ কোটি ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ২৭২ টাকা। তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আসামি খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গত ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর হিসাব নং-৩৩০-৩১২-১৯১-৭ খুলেন, যাতে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর স্থিতি ৫ লাখ ৩ হাজার ৩২৫ দশমিক ১৮ সিঙ্গাপুর ডলার।
যা বাংলাদেশী টাকায় প্রতি সিঙ্গাপুর ডলারের মূল্য ৬২.৫০ টাকা হিসেবে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৪ টাকা। তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আসামি খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার এ হিসাব নং-০৯৬০৭৫০১৭২ খুলে ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর তারিখে স্থিতি ১০ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রতি বাথ এর মূল্য ২.৫৫ টাকা হিসেবে ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তদন্তকালে দেখা যায় যে, আসামমি খালেদ মাহমুদ ভূইয়া বর্ণিত ০৩টি দেশে বাংলাদেশী টাকায় মোট (৫,৩৪,২৫,২৭২/- + ৩,১৪,৫৭,৮২৪/- + ২৫,৫০,০০০/-) = ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬/-টাকা দেশে অবৈধ উপায়ে অর্জন করে পাচার করেছেন।
তদন্তকালে তার নামে ৪২ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৪ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন অভিযোগের তথ্য পেয়েছেন এবং ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬/-টাকা অবৈধ প্রক্রিয়া বিদেশে পাচারের মাধ্যমে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করেছেন।
যারফলে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশীট দাখিলের সুপারিশ করে সাক্ষ্য-স্মারক দাখিল করেন। কমিশন আজ এ চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট বিচারকি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।#