দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সুপ্রিমকোটসহ দেশের সকল আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আপনারা মানুষের সঙ্গে মানবিক আচরণ করবেন। শুধুমাত্র টাকা- পয়সা বেশি দিতে পারেননি বলে (বিচারপ্রার্থী) তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না, তাদেরকে দূর-দূর করে তাড়িয়ে দেবেন না। কারণ এ আচরনে আপনাকে (আইনজীবী) যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি খুশি হবেন? তাই এটা কখনো করবেন না’।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনাদের সৎ থাকতে হবে। ফিস (ফি) যদি হয় ২০ হাজার টাকা, সেটাই নেবেন। মানুষের দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে দুই লাখ টাকা নেবেন না। এ যে মানুষের দুরবস্থার সুযোগ নেওয়া, এটা অসততা। বিবেকের কাছে অসততা। এটি সৃষ্টিকর্তার কাছেও অসততা।
লোকজন ভাবতে পারে আপনি অসৎ। এভাবে নিলে হয়তো বাড়ি-গাড়ি করতে পারবেন, কিন্তু কোনোভাবেই ওপরে উঠতে পারবেন না’।
১৮ জুন দিবাগ রাতে রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতি, ঢাকার ‘আইনজীবী পুনর্মিলনী-২০২২’ এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিমপ্র কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপ্রার্থী মানুষের দুরবস্থার সুযোগ নেওয়া অসততা। এটি বিবেকের কাছে অসততা। সৃষ্টিকর্তার কাছেও অসততা।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আইনজীবীদের আরও বলেছেন, আপনাদের সৎ থাকতে হবে, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং মামলার বিষয়বস্তু আদালতে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে আমরা কারও না কারও ওপর নির্ভরশীল।
অন্যের সাহায্য ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। এই যে আপনি স্যুট, টাই, চশমা পড়লেন, এগুলো কেউ না কেউ দিয়েছে। এখন যার কাছ থেকে নিলেন তাকে কী দিলেন? গ্রামের বাড়ি থেকে শ্যামনগর, সাতক্ষীরা হয়ে যে লোকটি বিচারের জন্য ঢাকায় আসলেন, শুধুমাত্র পয়সা বেশি দিতে পারেননি বলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন, তাকে দূর-দূর করে তাড়িয়ে দেবেন, তাতে আপনাকে যে সৃষ্টি করেছেন তিনি কি খুশি হবেন? তাই এটা কখনো করবেন না। মানুষের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে।
বিচারের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানবিচারপতি বলেন, বিচারিক আদালতে আশির দশকের মামলা এখনো বিচারাধীন। যে লোকটা বিচারের জন্য ২০ বছর, ৪০ বছর ধরে ঘুরছেন, আদালতের প্রতি তার কেন আস্থা থাকবে? পুরোনো মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারিক আদালতগুলোকে বিশেষ বার্তা দেওয়া হবে বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।