দূলবীণ নিউজ ডেস্ক:
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদনে এলে কোভিড-১৯ (করোনা) ভ্যাকসিনের সাশ্রয়ী ও ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিতের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। আর এ ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
গত ২৩ জুলাই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের গবেষণা, উন্নয়ন, সরবরাহ এবং সমতাভিত্তিক বণ্টন কাঠামো বিষয়ক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এ আহ্বান জানান।
ইভেন্টটি যৌথভাবে আয়োজন করেন কমনওয়েলথ ও জাতিসঙ্ঘ বিষয়ক ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ এবং ইউনাইটেড ন্যাশন্স ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাষ্ট্রদূত অ্যালিজাবেথ কাউসেনস।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিডের সফল ভ্যাকসিন আবিষ্কারের অগ্রগতি খুবই ইতিবাচক। এসব ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন সম্পদে পরিণত করতে সুদৃঢ় বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের আবারো জোরালোভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বিশ্বে সবাই এক অপরের সাথে সংযুক্ত। তাই বৈশ্বিক এই স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একতাবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাসের পুনঃসংক্রমণ রোধ করতে চাইলে প্রস্তুতি, প্রতিরোধ ও পুনরুদ্ধার বিষয়ে আমাদের কার্যকর বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।
রাষ্ট্রদূত করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই, ভবিষ্যৎ সুরক্ষা এবং দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ভ্যাকসিনের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে প্রফেসর সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বে অক্সফোর্ড জেনারেল ইনস্টিটিউট টিমের কাজের প্রশংসা করেন।
কোভিড-১৯ এর একটি কার্যকর ও নিরাপদ ভ্যাকসিন তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ট্রায়াল সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাবাব ফাতিমা।
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ওষুধ শিল্পের কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আমাদের ওষুধ কোম্পানিগুলো অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে ১৪৫টি দেশে রফতানি করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুরসহ ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (ওআইসি) দেশগুলো রয়েছে।
মেধাস্বত্বের অধিকার অবলোপন এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো বৈশ্বিক সরবরাহের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে সক্ষম।
অনুষ্ঠানটিতে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলোর সার্বজনীন প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত। সে বিষয়ে ব্রিফ করেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) টিকা, ভ্যাকসিন ও বায়োলজিক্যালসের পরিচালক কেট ব্রায়েন এবং গ্যাভীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম্যারি-অ্যাঞ্জে সারাকা-ইয়াও।
তারা জানান, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য বিশ্ববাজারে সমতাভিত্তিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ডাব্লিউএইচও এবং গ্যাভী কাজ শুরু করেছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজের প্রয়োজন হবে।
লর্ড তারিক আহমেদ বলেন, ব্রিটিশ সরকার বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সমতাভিত্তিক বণ্টন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রিটেন ইতোমধ্যে ৭৬ কোটি পাউন্ড বরাদ্দ করেছে।
ইভেন্টটিতে জাতিসঙ্ঘ সদস্য দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধি, অন্যান্য কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি ও নাগরিক সমাজের বিপুলসংখ্যক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। #