দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
পুলিশ আন্তরিকতার সাথে ইচ্ছো করলে অনেক ভাল কার করতে পারেন। যা অন্য পেশার লোকজনের পক্ষে অত সহজে সম্ভব নয়। সমাজের অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনা, সাধারণ ও অসহায় মানুষের জান -মাল উদ্ধারসহ নানা কল্যাণ কর কাজে পুলিশের অনেক কৃতিত্ব রয়েছে।
এমনই এক উদাহরন সুষ্টি করেছেন রাজধানী থেকে অনেক দূরে বরগুনার আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবং ওই থানার পুলিশ কর্মকর্তারা।
অভিযোগ পাবার মাত্র দুই দিনের মাথায় মন্টু মিয়া নামের এক ভিক্ষুকের এক লাখ টাকা উদ্ধার করে তাকে থানায় ডেকে চেয়ারে বসিয়ে টাকা হাতে তুলে দিয়েছেন।
পুরো ঘটনাটি ‘ দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকমের পাঠকের জন্য প্রকাশ করা হলো:
জানা যায়,জম্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী বরগুনার আমতলী দক্ষিণ সওদাগর পাড়া এলাকার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মন্টু মিয়া (৫০)। ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমেই পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো রকমেজীবন যাপন করেন তিনি।
সঞ্চয়ী মানসিকতায় ভিক্ষের টাকা তিলে তিলে গত ১০ বছরে এক লাখ টাকা জমিয়ে ছিলেন তিনি। ওই টাকা আরো লাভের আশায় একই এলাকার আব্দুর রব গাজীর (৫২) মাধ্যমে নূর জামাল মুন্সিকে ব্যবসায়ীক কাজে দিয়ে ছিলেন। কিন্তু লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকাই মেরে দিয়েছিলেন প্রতারক নূর জামাল মুন্সি।
গত দেড় বছর ধরে চেষ্টা করেও এক লাখ টাকা উদ্ধার করতে পারেনি ভিক্ষুক মন্টু মিয়া। অবশেষে তিনি অভিযোগ দেন আমতলী থানায়। পরে ওই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া ভিক্ষুক মন্টুর মিয়ার টাকা উদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ওসি নিজে প্রতারক নূর জামাল মুন্সির কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায় করেন।
এদিকে গত ২৮ মার্চ বিকেলে ভিক্ষুক মন্টু মিয়াকে থানায় ডেকে সম্মানের সাথে চেয়ারে বসিয়ে ওই এক লাখ টাকা তার হাতে তুলে দেন ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়া। এই বিষয়টি শুধু বরগুনায় নয়, গোটা পুলিশ প্রশাসনের মর্যাদা অনেক গুন বৃদ্ধি করেছে।
‘দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকম’ পরিবারের পক্ষ থেকেও বরগুনার- আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া এবং তার সহকর্মীদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে ।
গণমাধ্যমের কর্মীদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ভিক্ষুক মন্টু মিয়া বলেন, ভিক্ষার আয় ও রোজগার দিয়ে বহু কষ্টে তার পরিবারের লোকজন চলেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের জমানো এক লাখ টাকা ব্যবসায়ে খাঁটিয়ে কিছু লাভের আশায় একই এলাকার নূর জামাল মুন্সিকে দিয়ে ছিলেন। লাভ তো দূরের কথা পুরো টাকাই আত্মসাত করেছে ওই প্রতারক। পরে নিরুপায় হয়ে আমতলী থানায় অভিযোগ করেন। এরপর মাত্র দুই দিনের মাথায় ওসি সাহেবের তার এক লাখ টাকা উদ্ধার করে দেন। এই ঘটনায় ওসি সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।’
ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ সমাজের অবহেলিত ও শারীরিক প্রতিবন্ধী মন্টু মিয়া টাকার মেরে দেয়ার একটি অভিযোগ থানায় আসে। পরে এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে দুই দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। পরে ভিক্ষুক মন্টু মিয়াকে থানায় ডেকে তার হাতে ওই এক লাখ টাকা তুলে দিতে পেরে নিজের কাছেই ভাল লাগছে। একই সঙ্গে ওই নূর জামাল মুন্সিকে শেষ বারের মতো কড়া ভাষায় সাবধান করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে আর এই ধরনের কাজ না করেন।’#