দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
বর্তমানে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে। পাহাড়ী ঢল ও অতিরিক্ত বৃষ্টি এই বন্যার কারণ। প্রধানমন্ত্রীও গণমাধ্যমে বলেছেন, এবারকার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ১৯৮৮ সালের চেয়েও এ বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। পানি বেশী উঁচুতে না উঠলেও পানি না সরে আটকে থাকবে, যাতে জন-জীবন এক দু:সহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।
মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চের নেতা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আরো উল্লেখ করেছেন, সাধারণত: জুন-জুলাইয়ের বন্যা এক সপ্তাহ থেকে দশ দিনের মতো স্থায়ী হয়। মূলত: সিলেটের হাওড় এলাকা এবং ব্রক্ষ্মপুত্র ও তিস্তা অববাহিকা জুড়ে এই বন্যা হয়। কিন্ত এবারে চট্টগ্রাম, পদ্মার দুই পাড়ের জেলাগুলো, উত্তরাঞ্চলের আত্রাই অববাহিকায় পানি চলে এসেছে। শরীয়তপুর, মাদারীপুরেও বন্যার পানি পৌঁছেছে; এমনকি রাজধানী ঢাকারয়ও পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাজধানীও বন্যা কবলিত হয়ে পড়বে।উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে না হতেই এবারে আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্যা বা জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি হলে দেশের অর্ধেকেরও বেশী জনগোষ্ঠী দুর্ভোগের শিকার হবে। আমরা জানি, ভাটির দেশ হিসেবে উজানের ঢলের পানি হতে সৃষ্ট বন্যা আমরা এড়াতে পারবো না।
তবে অতীতে বন্যা এতোদিন দীর্ঘস্থায়ী হতো না; বলাইবাহুল্য নদীবিনাশী বাঁধ, যেখানে-সেখানে স্লুইস-কালভার্ট-সেতু তৈরি করে অবকাঠামো কেন্দ্রিক যে উন্নয়ন আমরা বাস্তবায়ন করে চলেছি, তার ফলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে; প্রকৃতপক্ষে পানি সহজভাবে সাগরে পড়তে না পেরে আটকে যাচ্ছে, আর বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, যা বন্যার নামে প্রকৃতপক্ষে জলাবদ্ধতা তৈরি করছে।
একে কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মাহামারীর কারণে দেশের শ্রমজীবী, ভূমিহীন, দিনমজুর প্রভৃতি নিম্ন আয়ের মানুষেরা খুবই কষ্টে আছেন। তার উপর বন্যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানুষের জীবন-জীবিকা একেবারে চরমতম বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর খাবার সংকটের পাশাপাশি সুপেয় পানির হাহাকার পড়েছে।
ক্ষেতের ফসল, গবাদিপশু-পাখি ও মৎস্যখামারীদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্যে বড় ধরণের হুমকি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বানভাসী মানুষকে রক্ষায় ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। বন্যা পরিস্থিতি অনেক ক্ষেত্রে ত্রাণ বিলি ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এই দুর্যোগে মানুষকে টিকিয়ে রাখাই এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমরা মনে করি। একারণে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে একে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্যে কমপক্ষে ছয় মাসের জন্যে খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্যে দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।