দূরবীন নিউজ ডেস্ক :
ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ ও সড়ক সংস্কার না হওয়ায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
২০১৭ সালে ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ ও সড়ক দুই বছরেও সংস্কার হয়নি। চলাচলের ভোগান্তি ৩০ হাজার মানুষের । ফলে ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন হাজার শিক্ষার্থীসহ দশটি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। খবর ইউএনবির।
এ নিয়ে গ্রামবাসীসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। বর্ষা নামলেই শিক্ষার্থীরা স্কুল-মাদরাসায় যেতে পারেন না। বন্ধ হয়ে যায় গ্রামবাসীর হাট-বাজারে যাওয়ার সুবিধা। তবে ধরলা নদীর ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাশ হলে এই সমস্যা থাকবে না, সেই সাথে সড়কটি মেরামতের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এলাকাবাসী জানায়, ২০১৭ সালের বন্যার তাণ্ডবে সদরের হলোখানা ইউনিয়নের আরডিআরএস বাজার থেকে কাগজিপাড়া সড়কের ৭০০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। এছাড়াও এই বাজারের পূর্ব দিকের বেড়িবাঁধের ১২০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। বাংলাবাজার টু প্যাড্ডার মোড় বেড়িবাঁধের পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের এই রাস্তা ও বেড়িবাঁধটি ফুলবাড়ী ও কুড়িগ্রামের সাথে যোগাযোগের একমাত্র পথ।
তারা জানান, কয়েক জায়গায় গভীর খাল হওয়ায় বর্ষাকালে তাদের সীমাহীন কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়। অথচ গত দুবছরেও ক্ষতিগ্রস্ত এই সড়ক ও বাঁধটি মেরামত করা হয়নি। এবারের বন্যায় বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।
এই বাঁধ ও রাস্তার ওপর দিয়ে হলোখানা ইউনিয়নের কাগজিপাড়া, সারডোব, লক্ষ্মীকান্ত, ছাটকালুয়া, ফুলবাড়ি উপজেলার বড়লইসহ ১০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ এবং চর সারডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর কাগজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়, সারডোব ইমদাদিয়া আলিম মাদরাসাসহ ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার শিক্ষার্থী চলাচল করে।
হলোখানা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মোক্তার হোসেন বলেন, ‘নৌকাও নেই, রাস্তাও নেই, রোগী নিয়ে আমরা প্রায়ই বিপদে পড়ি।’
আরডিআরএস বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। এখন সারাদিনে ২০০ টাকা আয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
হলোখানা ইমদাদিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী জুয়েল রানা জানান, বর্ষার সময় তারা বাড়িতেই বসে থাকেন, মাদরাসায় আসতে পারে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ অনেক জায়গায় ঘুরেছি। কোনো লাভ হয়নি। এখন যদি বাঁধ ও আর রাস্তা মেরামত না হয়, সামনের বর্ষায় আমাদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।’
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, সারডোব ও পাশ্ববর্তী এলাকার কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভাঙা রয়েছে। ধরলা নদীর ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প একনেকে পাশ হলে এই সমস্যা থাকবে না। তবে প্রকল্প পাশ হতে বিলম্ব হলে আগামী বর্ষার আগে ভাঙা বাঁধ মেরামতের চিন্তা রয়েছে।
অন্যদিকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা প্রকৌশলী সামিন শারার ফুয়াদ জানান, এই বছর যেসব রাস্তা মেরামতের প্রস্তাব দেয়া আছে তার মধ্যে সারডোবের ভাঙা রাস্তাটি নেই। তবে আগামীতে এই রাস্তাটি মেরামতের প্রস্তাব দেয়া হবে। #