মো. সাজ্জাদ হোসেন, দূরবীণ নিউজ :
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র রিপোর্টার মো. সাজ্জাদ হোসেনের দুই মেয়ে রিদা ও স্নাতার লেখা ‘প্রিয় বঙ্গবন্ধুকে’ নিয়ে একটি খোলা চিঠি। আজ অনলাইন নিউজ পোটাল ‘ দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবহু প্রকাশ করা হলো:
প্রিয় বঙ্গবন্ধু, আমাদের সালাম নিও।
কেমন আছো তুমি? নিশ্চয়ই অজস্র তারার মাঝে তুমি ভালোই আছো। তোমার উজ্জ্বল দীপ্তিতে নিশ্চয়ই আকাশ আলোকিত, আর সেই আলোকচ্ছটা পৃথিবীর বুকেও পড়ছে।
আচ্ছা, আমাদের জানতে খুব ইচ্ছে করে তোমার এই দীপ্তি দেখে তোমার আশপাশের তারারা কি হিংসায় কাতর হয়? যেমনি এদেশের কিছু নরপিশাচ তোমার প্রতি হিংসায় জ্বলে পুড়ে তোমার পুরো পরিবারকে তাদের প্রতিহিংসার আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল।
সেদিন হাসু বো, আর রেহানা বো প্রাণে বেঁচে গেলেও পরিবারের অন্য সবাই এমনকি ছোট্ট শিশু রাসেলও ওই পশুদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। হিংসা -প্রতিহিংসা এই শব্দগুলো খুব খারাপ তাই না বঙ্গবন্ধু।
জানো, আমরা শিশুরা কিন্তু তোমার আদর্শের পথ ধরে বন্ধুদের কোন ভাল কাজের হিংসা না করে, তারা যেন আরও ভাল কিছু করতে পারে এজন্য তাদের উৎসাহ দেই। তুমিও তোমার বন্ধু তারাদের বলে দিও। এরাও যেন এমনটি করে।
আর তুমি বললে এরা নিশ্চয়ই শুনবে। কারণ তোমার যেই বলার ক্ষমতা! মনে নেই ৭১ সালের ৭ই মার্চের কথা! তুমি সেদিন শুধু বলেছিলে- “তোমাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।” ব্যস তোমার এক কথাতেই বাঙালি সেদিন অস্ত্রে শান দিয়েছিল।
পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সেই অস্ত্র নিয়েই জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল। বঙ্গবন্ধু জানো তোমাকে ছাড়া এই স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়েছিল। তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পড়েছিল হায়েনাদের কালো থাবা।
কিন্তু আশীর্বাদ হিসেবে আমাদের মাঝে আসেন শেখ রাসেলের প্রিয় হাসু বো, তোমার আদরের হাসু, আর আমাদের প্রিয় শেখ হাসিনা আপা।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে তোমার আরাধ্য সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করেছেন। তুমি কি জানো জাতির পিতা তোমার বাংলা এখন বিশ্বে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তোমার সাধের সোনার বাংলা এখন উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখে।
তুমি যদি একবার ফিরে আসতে তাহলে দেখতে পারতে তোমার সুযোগ্য কন্যা কত সুন্দর করে সাজিয়েছে বাংলাকে। জানি তোমার ফিরে আসা আর সম্ভব নয়, কারণ আমি শুনেছি, একবার যে আকাশের তারা হয়ে যায়, সে আর ফিরে আসতে পারে না। তবু তুমি শুধু একবারটি চেষ্টা করো না, প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
তুমি কি জানো বঙ্গবন্ধু তোমার জন্মদিনে আজ বাঙালি কত উচ্ছ্বসিত, কত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কত ঘটা করে তোমার জন্মদিন পালন করছে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় তোমার বজ্রকন্ঠের ভাষণ ভাজছে। শিশু সমাবেশ হচ্ছে, কেক কাটা, মিষ্টি বিতরণ হচ্ছে। তোমার জন্মদিনটি এখন জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়।
এবার তোমার জন্মদিন আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অনেক বিদেশি অতিথি আসছে বলে শুনেছি। তারা আসবে আর তুমি নেই এটা কেমনে হয় বলতো।
আচ্ছা বঙ্গবন্ধু তুমি কি জানো, আমাদের দাদাভাই নানাভাইও তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে ৭১ সালে যুদ্ধে গিয়েছিল। এরা দু’জনেই বীর মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু তারাও আকাশের তারা হয়ে গিয়েছে। এজন্যও আমাদের মনে অনেক কষ্ট আমাদের নানাভাইকে তো তুমি সংসদের এমপিও বানিয়ে ছিলে।
তিনিও চেয়েছিলেন তার নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুরের নড়িয়াকে সুন্দর করে সাজাতে, সেখানকার মানুষদের ভালো রাখতে, ওই এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করতে। কিন্তু অল্প কিছুদিন যেতে না যেতেই তাকেও নরপশুরা তোমার মতই হত্যা করেছে।
আমি শুনেছি তখন আমাদের মা আর মামারা অনেক ছোট ছিল। তারাও তখন শিশু ছিল। নানাভাই আর দাদাভাইয়ের সাথে দেখা হলে তুমি তাদের বলো, আমরা তাদের জন্য খুব মন খারাপ করি। পারলে তারাও যাতে একবার এসে আমাদের দেখে যায়।
আচ্ছা বঙ্গবন্ধু তুমি নাকি শিশুদের খুব ভালবাসতে তোমার আদরের মেয়ে হাসূ, তিনিও শিশুদের খুব ভালোবাসেন। তুমি তাকে বলে দিও তিনি যেন আমাদের আরো ভালোবাসেন আদর করেন। আমাদের জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়তে আরো আরো কাজ করে যান।
আজ এখানেই শেষ করছি বঙ্গবন্ধু তুমি ভালো থেকো আর প্রতিটি সন্ধ্যায় পুব আকাশে এসো আমরা তোমার সাথে কথা বলবো। আর সব কথা তোমাকে জানাবো।
ইতি -তোমার প্রিয় কোটি শিশুর বন্ধুর ‘রিদা ও স্নাতা’ । #