দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
প্রতিবছর বিশ্বে ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাবারের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন। এসব মানুষ দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমনকি ভেজাল খাদ্যের ফলে ৪ লাখের অধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত ভেজাল খাবার খেয়ে ৪৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। এজন্য জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাবার তৈরি এবং বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়ন জরুরি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘নিরাপদ খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য আন্দোলন বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে আলোচকরা এসব কথা বলেন।
আসন্ন রমজানে সকল খাদ্যদ্রব্য ও ভোগ্যপণ্য ভেজালমুক্ত রাখতে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ ও ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫’ অবিলম্বে বাস্তববায়নের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জাকির হোসেন বলেন, সিয়াম সাধনার মাস রমজানে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারকে কঠোরভাবে প্রণীত আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের প্রায় সকল ভোগ্যপণ্যের মধ্যে ভোজাল ঢুকে গেছে। অধিক লাভের আশায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও উৎপাদকরা খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছে। শক্ত হাতে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব না হওয়ায় তা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে ছোট বড় সকল খাবার দোকানে ভেজাল পাওয়া মিলছে। কিন্তু সে তুলনায় আইনের বাস্তবায়ন খুবই নগন্য।
আয়োজক সংগঠনের সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কামরুজ্জামান বাবলুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বলেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে দূষিত খাবার খেয়ে প্রায় ১৫ কোটি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে মধ্যে প্রায় দুই লাখ মানুষ মারা গেছেন। বাংলাদেশে ৪৫ লাখ মানুষ ভেজাল খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন।
মানববন্ধন থেকে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী দেশে বর্তমানে শতকরা ১৬ ভাগ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। রাসায়নিক মেশানো খাবার খেয়ে কিডনি রোগীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ খাবারে ভেজাল। মৌসুমী ফলেও রাসায়নিক প্রয়োগ করা হচ্ছে দেদারছে।
জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ এখনই বন্ধ না হলে অচিরেই তা চীনের কোরোনা ভাইরাসের মত মহামারি আকার ধারণ করবে। তিনি বলেন, ভেজাল খাদ্য রোধে একাধিক আইন থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে এক শ্রেণীর অসাধূ ব্যবসায়ীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে শহীদুল ইসলাম, ইউডা বিশ^বিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষক ঈসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ বক্তব্য দেন। #