দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) চেয়ারম্যান ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী মৃত্যূ বরণ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেছেন বলে সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পিডিপির মহাসচিব এম এ হোসেন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। সোমবার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী অবিভক্ত পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। দেশ স্বাধীনের আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন ড. কোরেশী। ২০০৪ সালে তিনি বাংলাদেশের গ্রিন পার্টি গঠন করেন।
২০০৭ সালের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) গঠন করেন। তিনি দেশবাংলা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
প্রখ্রাত সাংবাদিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপি চেয়ারম্যান ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী’র মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
এদিকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক শোকবার্তায় পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া ছাত্ররাজনীতির কিংবদন্তী ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী’র রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী’র মৃত্যুতে রাজনীতিতে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরনে বহু সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। বাংলাদেশের রাজনীতির একের পর এক নক্ষত্রের পতন জাতিকে অভিভাবক শূণ্য করে ফেলছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি যেভাবে মেধাহীনদের দখলে চলে যাচ্ছে সখানে তারমত মেধাবী নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ব্রেইন স্ট্রোক করলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফেরদৌস কোরেশীকে। এরপর প্রায় অর্ধমাস ওই হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হতেই বাসায় ফেরেন তিনি।
ষাটের দশকে অবিভক্ত পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন ফেরদৌস কোরেশী। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপিও নির্বাচিত হন। অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে ফেরদৌস কোরেশীর অবদান ছিল অসামান্য। ৬ দফা ও ১১ দফাভিত্তিক ছাত্র ও গণআন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল তার।
একাত্তরে মুক্তাঞ্চল থেকে মুক্তিযুদ্ধের মুখপাত্র হিসেবে দেশবাংলা পত্রিকা বের করেন ফেরদৌস কোরেশী। ওই সময় থেকেই তিনি পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি গঠন করলে ওই দলের প্রথম যুগ্ম-মহাসচিব পদে দায়িত্ব পান ফেরদৌস কোরেশী। ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে তিনি বাংলাদেশে বিকল্প রাজনীতির আহ্বান জানিয়ে ২০০৭ সালে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) গঠন করেন। আমৃত্যু ওই দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন ফেরদৌস কোরেশী। # কাশেম