দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ন্যাশনাল ব্যাংকের দিলকুশা শাখার প্রায় আড়াই কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ‘দি সিনফা নিটার্স লিমিটেডের’ চেয়ারম্যান চীনা নাগরিক ইয়াং ওয়াং চুংসহ ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদÐ দিয়েছেন বিচারিক বিশেষ জজ আদালত।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। বিচারিক আদালত ‘দি সিনফা নিটার্স লিমিটেডের’ চেয়ারম্যান চীনা নাগরিক ইয়াং ওয়াং চুং ও পরিচালক খসরু আল রহমানকে ১৩ বছর, পরিচালক মনসরুল হক ও মো. গোলাম মোস্তফাকে ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছেন। বর্তমানে এ চার আসামী পলাতক আছেন।
আদালত ওই মামলার অপর আসামী ন্যাশনাল ব্যাংকের দিলকুশা শাখার তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এক্সপোর্ট) আব্দুল ওয়াদুদ খান ও তৎকালীন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন চৌধুরীকে ৬ বছরের কারাদÐ প্রদান করেছেন। একই সঙ্গে এ দুই আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।
রায়ের নির্দেশনা বলা হয়েছে, যে হেতু আসামীরা ন্যাশনাল ব্যাংকের দায়দেনা বাবদ দুই কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা পরিশোধ না করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। ফলে উক্ত ন্যাশনাল ব্যাংকে বন্ধকি (মর্টগেজড) হিসেব গ্রহণকৃত জমির জাল দলিলসহ কাগজপত্র ব্যবহার করে গোপনে ওই জমি বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে সর্তক করা হয়েছে। যাতে ওই জাল দলিল ব্যবহার করে জমিটি বিক্রির মাধ্যমে ব্যাংকের (তাদের) ছাড় করা ঋণের টাকা উদ্ধার করতে না পারে। কারণ ইতোমধ্যে বন্ধকি জমির প্রকৃত মালিকও হয়রানির শিকার হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সূত্র মতে,গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের আদালতে মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করে ছিলেন। কিন্তু ওইদিন মামলার রায় প্রস্তুত না হওয়ায় পরে ১৬ নভেম্বর রায় ঘোষনা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে একটি জাল দলিল তৈরি করে তা খাঁটি হিসেবে ব্যাংকে বন্ধক রাখেন। দীর্ঘদিন ব্যাংকের কাছ থেকে ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার নিশ্চয়তা’ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন।
এ জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলাটি দায়ের করেন। পরে ২০১৮ সালের ২৪ জুন দুদকের ওই কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত শেষে চীনা নাগরিক ইয়াং ওয়াং চুংসহ ৬জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালত এ ৬ আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। বিচারিক আদালতে ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। #