দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ঢাকাই ছবির চিত্রনায়িকা পরীমণিকে মাদক মামলায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেয়ার বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে নিম্ম আদালতের দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন । একইসঙ্গে রিমান্ড চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে মামলার নথিসহ (সিডি) তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের ভাচুর্য়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সৈয়দা নাসরিন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।
নায়িকা পরীমণির তিন দফায় ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর নিয়ে এক শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, কোনো উপাদান ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা প্রার্থনা দিলো রিমান্ডের, আপনি (ম্যাজিস্ট্রেট) মঞ্জুর করে দিলেন। এগুলো কোনো সভ্যসমাজে হতে পারে না, বর্তমানে। গত বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের ভাচুর্য়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
গত ২২ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে পরীমণির জামিন আবেদন করা হয়। আদালত ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। পরদিন আবেদনটি দ্রুত শুনানির জন্য আরও একটি আবেদন দেন কিন্তু সেটিরও শুনানি হয়নি। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদনের শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে ২৬ আগস্ট ওই আবেদন করেছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। এতে বিলম্বে দিন নির্ধারণ করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
এরপর আদালত রুল জারি করেন এবং শুনানির জন্য ১ সেপ্টেম্বর দিন রাখেন। এর মধ্যে তিন দফায় ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বৈধতা নিয়ে ২৯ আগস্ট স্বপ্রণোদিত রুল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে (আসক)। ওই দিন আদালত বলেছেন, রুল রিটার্ন হয়ে আসুক, এরপর দেখব। দুই দিন পর মঙ্গলবার ৩১ আগস্ট শুনানি করে পরীমণিকে জামিন দেন মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর সকালে পরীমণি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এদিকে ধার্য তারিখ অনুসারে বুধবার রুল শুনানির জন্য হাইকোর্ট মামলাটি কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে নট টু ডে আদেশ দেন। তার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। আসকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। পরীমণির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মজিবুর রহমান।
গত ৪ আগস্ট বিকেলে বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমণির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মদ, মদের বোতলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।
এরপর ৫ আগস্ট চার দিন এবং ১০ আগস্ট পরীমণির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৩ আগস্ট রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৯ আগস্ট তৃতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে ২১ আগস্ট কারাগারে পাঠানো হয়।#