দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ নিজ দপ্তরে বসেই কর্মকর্তাদের সমন্বয় সভার কার্যক্রমটি মনিটরিংকালে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েনে। একপর্যায়ে দুদক চেয়ারম্যান কাউকে কিছু না জানিয়েই হঠাৎ সমন্বয় সভা কক্ষে প্রবেশ করেই মাইক্রোফোনটি নিয়ে কমিশনের সচিব, সকল মহাপরিচালক ও পরিচালকদের উদ্দেশ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পবার (৯ জানুয়ারি) সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতের সভাপতিত্বে কমিশনের সমন্বয় সভা সকাল ১০ টায় শুরু হয়। তবে সভা চলাকালে আকস্মিকভাবে বেলা সাড়ে ১১ টায় হঠাৎ সভা কক্ষে প্রবেশ করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। অপ্রত্যাশিতভাবে দুদক চেয়ারম্যানের আগমণে কর্মকর্তারা হক্চকিয়ে যান।
গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।
তার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দুদক চেয়ারম্যান ওই সভার সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি ব্যথিত , ক্ষুব্ধ এবং দুঃখিত। আপনারা কি আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন ? আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই , নির্ধারিত সময়ে অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
কিভাবে ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপিত হয় ? এতে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে।
মনে রাখবেন দুদক একটি গণ প্রতিষ্ঠান । জনগণের কাছে দুদকেরও জবাবদিহিতা রয়েছে । তাই আপনাদেরও জবাবদিহিতা করতে হবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অনুসন্ধান ও তদন্তে টাইম-লাইন না মানার জন্য রেকর্ড-পত্র সময়মতো না পাওয়ার বিষয়টি আপনার বলে থাকেন । কী ভয়ঙ্কর কথা ? কে রেকর্ড-পত্র দেয় না ? যে বা যারা অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনাদের রেকর্ডপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কেন দুদক আইন,২০০৪ এর ১৯(৩) ধারায় মামলা হচ্ছে না ? ইচ্ছাকৃতভাবে যারা দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তে সংশ্লিষ্ট তথ্য সরবরাহ করছেন না, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে।
কেউ যেন ছাড় না পায়। আপনারা আইনি দায়িত্ব পালন করবেন। একটিও বেআইনি কাজ করতে পারবেন না। আইনি দায়িত¦ পালন না করে বসে থাকবেন, এটা কমিশন মেনে নেবে না। এভাবে বেআইনি যুক্তির মাধ্যমে অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তে টাইম লাইন না মানার সংস্কৃতি সহ্য করা হবে না।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন দেশের জনগণ মনে করে, সর্বত্রই দুর্নীতি রয়েছে। তাই দুদকের প্রতি তাদের আকাশচুম্বী প্রত্যশা । তাদের চাহিদার তুলনায় কমিশনের জোগানতো নগন্য। এর দায় কে নেবে ? আপনাদেরই নিতে হবে।
আপনাদের পদোন্নতি, দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ সবইতো দেওয়া হচ্ছে। তারপরও আপনারা কেন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন না। বছরের শুরুতেই সতর্ক করছি। গুনে গুনে হিসাব নেওয়া হবে। কেউ ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক মামলা দায়ের করার পর, সেই মামলায় তো ফাইনাল রিপোর্ট (মিথ্যা) হতে পারে না ? এ জাতীয় ঘটনা, কীভাবে কমিশনে উপস্থাপিত হয় ? তাহলে আপনারা কি দুদক আইনের ২৮ ধারা সম্পর্কে সম্যক ধারণাও রাখেন না ?
কেউ যদি মিথ্যা জেনে বা তথ্যের সত্যতা সর্ম্পকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত না হয়ে তথ্য দিয়ে কমিশনে মামলা দায়ের এর সুপারিশ করে অনুমোদন গ্রহণ করত: মামলা দায়ের করেন । তাহলে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন , ২০০৪ এর ২৮ (গ) ধারায় মামলা মামলা হচ্ছে না কেন ? আজ থেকে এ জাতীয় মিথ্যা মামলা দায়েরকারী তিনি যেই হোন না কেন, তাঁর বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। #