দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলেনুর তাপস নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই দুদক দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধ করাসহ হয়রানীর অভিযোগ করছেন, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।
তিনি বলেছেন, ” ডিএসসিসির ব্যর্থ মেয়র তাপসের প্ররোচনায় এবং দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তার প্রতিষ্ঠানের ৩টি , তার বৃদ্ধতা মা ফাতেমা হানিফের একটি, ছোট বোন শাহানা হানিফের দুটি ও স্ত্রী ফারহানার দুটি সহমোট ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধ করেছেন।”
আজ মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবস্থ আবদুস সালাম মিলনায়তনে ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধের প্রতিবাদে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জাবাবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এসব কথা বলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তার অনুসারি পুরান ঢাকার বেশ কিছু লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, “দেশের একজন নাগরিক হিসেব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধ করার আগে দুদক এবং আদালত থেকে কোনো নোটিশ পাবার অধিকার রাখেন। কিন্তু তাদেরকে কোন নোটিশ দেওয়া হয়নি। ফলে এখানে তার এবং তার পরিবারের সাংবিধানিক এবং মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, গতকাল সোমবার আদালত আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধ করার আদেশের কপি হাতে পেয়েছেন। কিন্তু গতকাল অনেক সাংবাদিক প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। তিনি বিক্ষিপ্তভাবে কোনো কথা বলিনি। তাই আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া জানাতে এসেছেন।
তিনি বলেন, ” দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, সন্দেহমূলকভাবে সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭ কোটি ৬২ লাখ, ৭২ হাজার ৮০৩ টাকা জব্ধ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, এই শহরের মানুষ সাঈদ খোককের পরিবারের খবর জানেন। টানা ৭০ বছর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহি তার নানাা মাজেদ সরদারের পরিবার নগরবাসীর সেবা করেছেন। সেই মাজেদ সরদারের মেয়ে এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের বৃদ্ধা স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধ করা হয়েছে। এই অপমান সহ্য করার মতো নয়।
সাঈদ খোকন বলেন,: “আমার বাবা ঢাকার সফল মেয়র হানিফ জীবন দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন বাঁচিয়েছেন। সারা জীবন বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার সাথে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন। আমি সাঈদ খোকন ছাত্রজীবন থেকে টানা ৩৩ বছর বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করছি।”
তিনি বলেন. টানা ৫ বছর নগরবাসীর সেবা করছি, পুরান ঢাকার নিরীহ মানুষের লাশ দাফনের ফি/ টাকা মাফ করে দিয়েছিলেন। কিন্তুর বর্তমান মেয়র তাপস লাশের ওপর ট্যাক্স বসিয়েছেন। একটা লাশ দাফনে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। অসহায় মানুষ কোথায় পাবেন, এই টাকা। ”
তিনি বলেন, “তাপস মেয়রের দায়িত্বে গ্রহণের পর মানুষের ওপর জুলুম শুরু করেছেন। তার নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই আমাকে (খাকন) দুদক দিয়ে একের পর এক হয়রানী শুরু করেছেন।”
সাবেক মেয়র খোকন বলেন,” দুদক অনুসন্ধান ও তদন্ত করুক , আপত্তি নেই। কিন্তু তাপসের প্ররোচনায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে দুদকের হয়রানী মেনে নেয়া যায় না।”
তিনি বলেন, “এসব হয়রানীর বিরুদ্ধে রাজপথে এবং আদালতে শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। ঢাকা বাসী কখনো মাজেদ সরদারের মেয়ে এবং সাবেক মেয়র হানিফের পরিবারকে অযথা হয়রানী মেনে নেবে না।”
তিনি বলেন, ” তাপস মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের পর সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। আবার বড় বড় কথা বলেন”। আরো বড় হবার স্বপ্ন দেখেন, আমাকে মেরে কেনো বড় হতে চাও। মনে রেখো ঢাকা বাসী তোমাকে ছেড়ে দেবেন না ।”
উল্লেখ্য,ডিএসসিসি সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের সদস্যদের ৮টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) নির্দেশ দিয়েছেন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। গত ২৭ জুন, মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
অভিযোগ অনুসন্ধান চলাকালে দুদকের উপ পরিচালক জালাল উদ্দিন আহমেদ গত ২৭ জুন ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো অবরুদ্ধের আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন। ’
যে ৮টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে সাঈদ খোকনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৩টি অ্যাকাউন্ট , তার মা ফাতেমা হানিফের একটি, বোন শাহানা হানিফের দুটি ও সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা আলমের দুটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা হয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে যেন অর্থ উত্তোলন, স্থানান্তর বা হস্তান্তর করা না যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যাংক হিসাবগুলো জরুরিভিত্তিতে অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
আবেদনে আরো বলা হয়, অভিযুক্তরা ওই ব্যাংক হিসাবের অর্থ স্থানান্তর করতে চেষ্টা করেছেন; যা তদন্তে উঠে এসেছে। অভিযোগ নিষ্পত্তি পর্যন্ত না হওয়া পর্যন্ত এসব অস্থাবর সম্পত্তি স্থানান্তর বা হস্তান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতি হবে#