সর্বশেষঃ
দেশে পরি স্থিতি নিয়ে কূটনীতিদের ব্রিফিং করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই : ডা. শফিকুর রহমান রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির তথ্য প্রকাশ করাই শ্বেতপত্র কমিটির কাজ চোর ধরা নয় : ড. দেবপ্রিয় কলঙ্কজনক ঘটনা,পিলখানা হত্যাকাণ্ডের কারণ উদ্ঘাটনে স্বাধীন কমিশন গঠন র‌্যাক স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ফুটবলে ৪-০ গোলে বিজয়ী বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন ‘শেখ বশিরের’ বিরুদ্ধে হত্যা মামলা: বাদী নিশ্চিত নয়, উপদেষ্টা সেখ বশির আসামি বিমানবন্দরে অতিথির সম্মান পাবেন প্রবাসীরা: ড. মুহাম্মদ ইউনূস গুলশানে রাস্তা ও ফুটপাতের ২৫০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ফরিদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৫ জন আটক বন্যায় ক্ষতবিক্ষত রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়ক , জনভোগান্তি
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৬ অপরাহ্ন

ঢাকা টোব্যাকোর বিরুদ্ধে ১১ হাজার কোটি টাকার কর ফাঁকি অভিযোগ এনবিআর’র

দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ বৃহত্তম সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানি ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে। নানা কৌশলে ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট, সারচার্জ ও উৎসে ভ্যাট বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ ফাঁকির তথ্য প্রমাণ পেয়েছে ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাদের নিজস্ত তদন্তে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকির বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। শুধু তাইনয় ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত-কাজে অসহযোগিতার অভিযোগও রয়েছে।

সূত্র মতে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজের আমদানি থেকে উৎপাদন পর্যায়ে দফায় দফায় নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে অনিয়মের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এনবিআর’র করদাতা ইউনিট থেকে কর ফাঁকির ঘটনায় আদায় যোগ্য টাকা উল্লেখ করে দাবিনামা জারির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে গ্রæপটির ট্যাক্স ও ভ্যাট বিভাগের এজিএম রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, সিগারেট উৎপাদনে কাঁচামাল পর্যায়ের ভ্যাট ও শুল্কের দাবি নিয়ে মূলত মতবিরোধ রয়েছে। ২০১৭ সালের ৮ জুন ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রথম অডিট কমিটি ওই প্রতিষ্ঠানটির ক্রয় হিসাব পুস্তক, বিক্রয় হিসাব পুস্তক, দাখিলপত্র (মূসক- ১৯), চলতি হিসাব পুস্তক, বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ও দাখিল করা হিসাব বিবরণী ইত্যাদি মূসক আইনের বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসারে যাচাই করে ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অপরিশোধিত বা ফাঁকি দেওয়া সম্পূরক শুল্ক বাবদ ৯ হাজার ৬৪৬ কোটি ৮৪ হাজার ১৮২ টাকা এবং ভ্যাট বা মূসক বাবদ দুই হাজার ৫৯৮ কোটি ৪৮ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৫ টাকার অপরিশোধিত রাজস্ব ফাঁকির হিসাব পায়। যা সুদ বাবদ ১০ হাজার ৭২০ কোটি ৬৪ লাখ ১০ হাজার ৫৭ টাকা এবং স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বাবদ পরিহার করা ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫২০ টাকা উদঘাটিত হয়। সবমিলিয়ে ২৩ হাজার ১১৯ কোটি ৯২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৫ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রাথমিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ আপত্তি করায় পুনঃযাচাই কমিটি/টিম গঠন করা হয়।

ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজের আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে একজন উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের দ্বিতীয় টিম গঠিত হয়। পুনঃযাচাই কমিটি বা টিম প্রথম কমিটির প্রাথমিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিল করা দলিলপত্র, বিভিন্ন উৎস হতে (যেমন- ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট কমিশনারেট) সংগৃহীত দলিল, প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য ইত্যাদি পর্যালোচনা করে ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত অপরিশোধিত বা ফাঁকি দেওয়া সম্পূরক শুল্ক বাবদ আট হাজার ২৮০ কোটি ১৮ লাখ ১২ হাজার ৪০২ টাকা, ভ্যাট বাবদ দুই হাজার ৩৪৩ কোটি ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ১১৪ টাকা, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বাবদ ১৪২ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯০ টাকা, অপরিশোধিত উৎসে মূসক বাবদ ২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৩ টাকার তথ্য পায়। সবমিলিয়ে ১০ হাজার ৭৯১ কোটি ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৯ টাকার রাজস্ব ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করে কমিটি। মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭ (৩) অনুযায়ী পরবর্তী তারিখ হতে পরিশোধের তারিখ পর্যন্ত সুদ পরিশোধযোগ্য।

এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজের হেড অফিস আকিজ ভবনের সফটওয়্যার সরেজমিন যাচাই করা হলেও কম্পিউটারে সংরক্ষিত কিছু তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু সার্ভারের রক্ষিত কোনো তথ্য দেখাতে সক্ষম হননি তারা। প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় সহযোগিতা না করে শেষ পর্যায়ে এসে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রদান করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালায় বলেও অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ ৬ বছরের নথি চালাচালি ও আপত্তিপত্র যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত হিসাব তৈরি করে ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের বিশেষ গোয়েন্দা টিম। চলতি বছরের ১২ এপ্রিল প্রতিবেদন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর দাখিল করার পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো হয় শুল্ক ও ভ্যাট আদায় করার জন্য। পরবর্তীতে এনবিআর চেয়ারম্যান সংস্থাটির একজন সদস্যকে বিষয়টি আরও যাচাই-বাছাই করার নির্দেশনা দেন। ওই যাচাই-বাছাই এখনও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

পুনঃযাচাই কমিটি বা টিম প্রথম কমিটির প্রাথমিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিল করা দলিলপত্র, বিভিন্ন উৎস হতে (যেমন- ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট কমিশনারেট) সংগৃহীত দলিল, প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য ইত্যাদি পর্যালোচনা করে ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত অপরিশোধিত বা ফাঁকি দেওয়া সম্পূরক শুল্ক বাবদ আট হাজার ২৮০ কোটি ১৮ লাখ ১২ হাজার ৪০২ টাকা, ভ্যাট বাবদ দুই হাজার ৩৪৩ কোটি ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ১১৪ টাকা, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বাবদ ১৪২ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯০ টাকা, অপরিশোধিত উৎসে মূসক বাবদ ২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৩ টাকার তথ্য পায়। সবমিলিয়ে ১০ হাজার ৭৯১ কোটি ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৯ টাকার রাজস্ব ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করে কমিটি।

ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ কাঁচামাল থেকে চূড়ান্ত উৎপাদন পর্যন্ত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ফাঁকি দিয়েছে এক হাজার ১৬৬ কোটি ৩৪ লাখ ১৬ হাজার ১৫৯ টাকা। এরপর ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সম্পূরক শুল্ক বাবদ যথাক্রমে দুই হাজার ৬৪ কোটি ১৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৫৮ টাকা, তিন হাজার ৪০৮ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ১২৪ টাকা এবং এক হাজার ৬৪০ কোটি ৯৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬১ টাকা ফাঁকি বা অপরিশোধিত রাজস্বের হিসাব পাওয়া যায় প্রতিবেদনে। সর্বমোট সম্পূরক শুল্ক বাবদ আট হাজার ২৮০ কোটি ১৮ লাখ ১২ হাজার ৪০২ টাকা ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়।
সিগারেট উৎপাদনে ব্যবহৃত তামাকসহ বিভিন্ন কাঁচামালে ভ্যাট বাবদ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২০২ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৭ টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৬৪৫ কোটি পাঁচ লাখ ৩১ হাজার ৮১ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২২ কোটি ৬০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭ টাকা এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভ্যাট বাবদ ফাঁকি দেওয়া হয়েছে ৪৭৩ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার ২২৯ টাকা।

সবমিলিয়ে তামাক ব্যবহারে ভ্যাট বাবদ দুই হাজার ৩৪৩ কোটি ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ১১৪ টাকা অপরিশোধিত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বাবদ ১৪২ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯০ টাকার ফাঁকি উদঘাটিত হয়েছে। যার মধ্যে ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সারচার্জ বাবদ যথাক্রমে ৪৩ কোটি ৩৫ হাজার ৪০৫ টাকা, ৬৮ কোটি ১৭ লাখ ৩৭ হাজার দুই টাকা, ৩১ কোটি ৫৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৮২ টাকার সারচার্জ বকেয়া বা অপরিশোধিত হিসাবে প্রমাণ মিলেছে।এ ছাড়া, অপরিশোধিত উৎসে মূসক বা ভ্যাট বাবদ ২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৩ টাকার তথ্য মিলেছে। সবমিলিয়ে শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ বাবদ ১০ হাজার ৭৯১ কোটি ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৯ টাকার রাজস্ব ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করে কমিটি।
# কাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ
  • ৩:৩৫ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৪ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩২ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12