দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
অবশেষে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ (ডিএসসিসি) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের কাছে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব হস্তান্ত করেছে ঢাকা ওয়াসা।এতোদিন রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে পুরনো বড় বড় ২৬টি খাল পরিস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রুপসী বাংলা গ্রান্ড বলরুমে ওয়াসা, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে এসব খাল হাস্তান্তর করা হয়েছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৮৮ সালের আগে ঢাকার খালগুলো তদারকি করতো তৎকালীন ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন। কিন্তু কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই পুরনো খালগুলো ওয়াসার কাছে গেল তার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তাই এতেদিন খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণে অনেকটা সমন্বয়হীনতা ছিল।
মন্ত্রী বলেন, এখন ঢাকার ২৬টি খাল ওয়াসার কাছ থেকে ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ওই দুটি সংস্থা করবে। এতে নগরে আর জলাবদ্ধতা হবে না।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় নাগরীক সেবা বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। একেক করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একটা সময় সিঙ্গাপুর বা উন্নত বিশ্ব নয়, ঢাকা শহরের সৌন্দর্য নিয়েই উদাহরণ দিতে পারবেন দেশের জনগণ।
ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আজ ঢাকাবাসীর জন্য ঐতিহাসিক দিন। আশা করি আসন্ন বর্ষায় ঢাকায় আর জলাবদ্ধতা হবে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর রাজনৈতিক নেতৃত্বে ওই কার্যক্রম সফল করা হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জিরানি খাল, শ্যামপুর খাল, মান্ডা খাল থেকে সব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। আগামী ২ জানুয়ারি থেকে ওই তিনটি খাল এবং দুটি বক্স কালভার্ট থেকে আবর্জনা অপসারণের কাজ শুরু করা হবে। আগামী মার্চের মধ্যে সব বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হবো। পরে জুনের মধ্যে ডিএসসিসির কালুনগর খালসহ বাকি খালগুলো বর্জ্যমুক্ত করা হবে।
তাপস বলেন, ডিএসসিসির খালগুলো বর্জ্যমুক্ত করার পর খাল পাড়ের সৌন্দর্য বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে ৯০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই তা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে। প্রস্তাবটি পাস হলে নাগরিকেরা তার সুবিধা পাবেন।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসির অধীনে থাকা পুরনো সবগুলো খাল ইতোমধ্যে ডিএনসিসি পরিষ্কার করেছে। তাই চলতি বছর ঢাকা উক্তরে এবার জলাবদ্ধতা হবার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, এছাড়া এসব খালের সৌন্দর্য বাড়াতে ডিএনসিসি গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, ঢাকা দুই সিটির পদস্থ কর্মকর্তারা ও এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।/