নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর ডেমরায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের হিসাব রক্ষক মো. আকরাম মিয়ার নিজের অ্যাকাউন্টে জ্ঞাত আয় বহিভূত ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা রাখার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২০ নভেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ বাদী উপপরিচালক শারিকা ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
শুধুমাত্র আকরাম মিয়ার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং অবৈধ উৎস গোপন করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যম মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২ও ৩) ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান দুদক উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ড. মাহবুবুর রহমান কলেজের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আকরাম মিয়ার নামে বেসিক ব্যাংকের মাতুয়াইল শাখায় ২০২২ সালের ৭ মার্চ পর্যন্ত পাঁচটি এফডিআর হিসাব খোলা হয়। হিসাবগুলো হলো- ৬১১৮-০১-০০১০৬৩৭, ৬১১৮-০১-০০১০৬৪২, ৬১১৮-০১-০০১০৬৫৮, ৬১১৮-০১-০০১০৬৬৩ ও ৬১১৮-০১ ০০১০৬৭৯।
বর্তমানে হিসাবগুলোতে ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকা স্থিতি রয়েছে। কলেজের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নামে ব্যাংকে ওই টাকার এফডিআর হিসাব থাকার বিষয়টি অস্বাভাবিক এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ হিসেবে অর্জিত। এমনকি ওই টাকা আকরাম মিয়ার অন্যান্য হিসাব থেকেই স্থানান্তরিত হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
সূত্র মতে, আকরাম মিয়া ২০১০ সালের ১ জুন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হিসাবরক্ষক পদে মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনে যোগদান করেন। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি বেসরকারি কলেজে যোগদানের পর থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে বেতন পান ৪২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪৩ টাকা। যা বেসিক ব্যাংকের এফডিআর হিসাবে জমা হওয়া ওই টাকার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
এমনকি অ্যাকাউন্টে টাকাগুলো রাখার বিষয়ে তিনি ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের গভর্নিং বডির কোনো অনুমোদন বা রেকর্ডপত্র প্রদান করতে পারেনি। তাছাড়া, কলেজের আয়-ব্যয় খাতওয়ারি হিসাবভুক্ত করে কলেজের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখার বিধান রয়েছে, তা কোনো কর্মচারীর ব্যক্তিগত হিসেবে রাখার সুযোগ নেই।
২০০৯ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের প্রবিধানমালা অনুসারে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে নিকটবর্তী কোনো তফসিলি ব্যাংকে হিসাব থাকবে যা গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমত, সদস্য-সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হবে। আকরাম মিয়া এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এ বিষয়ে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ‘কলেজ করণিকের হিসাবে ২৪ কোটি টাকা!’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই সময় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের হিসাবরক্ষক আকরাম মিয়া টাকার কথা স্বীকার করলেও তিনি ওই টাকার মালিক নন বলে জানিয়েছিলেন। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মাহবুবুর রহমানের নির্দেশে ওই টাকা তার হিসাবে রাখা হয়েছে এমন দাবি করেন তিনি। #কাশেম