দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী সরদার এবং তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের যাবতীয় সম্পদের বিবরণ চেয়ে পুনরায় নোটিশ পাঠিয়েছে দুদক।এর আগেও দুদক থেকে মো. ইউসুফ আলী সরদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদসহ ডিএসসিসির মার্কেট, বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড খাতের কোটি কোটি টাকা লুটপাট, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তথ্য চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়ে ছিল।বলতে গেলে দুদকের জালে আটকে যাচ্ছেন,ডিএসসিসির এককালের প্রভাবশালী রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার।
দুদকের পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ২৫ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, দুদক পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদের স্বাক্ষরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পাঠানো নোটিশে ডিএসসিসির সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারের নিজের এবং তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্বনামে/বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস এবং সম্পদ অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী চাওয়া হয়েছে।
তাকে এই নোটিশ পাবার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকে চাহিদা মোতাবেক সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে অথবা মিথ্যা বিবরণী দাখিল করলে দুদক আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এরআগে ডিএসসিসির সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী সরদারের বৈধ ও অবৈধ স্থাবর- অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান,এসি ল্যান্ডের অফিস, সাব রেজিষ্টারের অফিস, রাজউকসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ৬২টি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য উপাত্ত্ব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
গত ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর ডিএসসিসির সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধানেই প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে, সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সময় ইউসুফ আলী সরদারের দোর্দন্ড প্রতাপ, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংস্থার সকল দপ্তরে প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম ও দুর্নিতীর ছিল বিস্তর অভিযোগ।এসি আই কোম্পনী থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার মশার স্প্রে ‘অ্যারোসোল’ ক্রয় এবং বিতরণের বিষয়টিও নিয়ন্ত্র করেছেন ইউসুফ আলী সরদার। সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের ডান হাত বলে খ্যাত ছিলেন তিনি (ইউসুফ আলী সরদার)। মার্কেট নির্মাণ, দোকান বরাদ্দ এমনকি কয়েক হাজার দক্ষ-অদক্ষ কর্মচারী নিয়োগের বিষয়েও তার ভূমিকা ছিল।
২০২০ সালের ১৬ মে বর্তমান মেয়র শেখ ফজলেনুর তাপস দায়িত্ব গ্রহণের পর ১৭ মে অফিসের প্রথম কার্যদিবসেই দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে শীর্ষস্থানীয় দু’জনকে চাকরিচ্যুত করেন। তাদের একজন ছিলেন ইউসুফ আলী সরদার আর অপরজন হলেন সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান।
ইউসুফ আলী সরদারের (বর্তমানে চাকরিচ্যুত) বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ডিএসসিসির কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎপূর্বক শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তিনি কানাডায় একাধিক বিলাশবহুল বাড়ি করেছেন বলে অভিযোগও ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।/