দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও বিজয় সরণি এলাকায় জমি দখলের অভিযোগে ওই পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। রিটে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এছাড়া ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি যেন মেয়র পদে থাকতে না পারেন, সেই আবেদনও জানানো হয়েছে।
হাইকোর্টে দাখিল করা রিটে বিবাদী করা হয়েছে; স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রাজধানীর অধিবাসী মোহম্মদ আবদুর রহিম ও নুরতাজ আরা ঐশীর পক্ষে আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করা হয়। রিট আবেদনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ।
রিটে রাজধানীর তেজগাঁও বিজয় সরণি এলাকার কলমিলতা বাজার জবর দখল ও ক্ষতিপূরণ না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে রিট আবেদনের অপর রুলে মেয়রের পদ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না সেই মর্মেও আর্জি জানানো হয়েছে।
অপর এক রুলে চার হাজার কোটি টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না মর্মেও রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই মাসের মধ্যে ওই চার হাজার কোটি টাকা না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না রুলে তারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এই রিটের বিষয়ে হাইকোর্টে একটি দ্বৈত বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে শুনানি হতে পারে বলেও জানান আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
রিটকারী মোহাম্মদ আবদুর রহমানের অভিযোগ, এর আগে হাইকোর্টের রিট মামলায় ক্ষতিপূরণ দুই মাসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না মেয়র আতিকুল। প্রয়াত আনিসুল হক মেয়র থাকাকালীন আদালতের ওই নির্দেশ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব ২০১৭ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার ডিসির কাছে পাঠিয়েছিলেন।
ঢাকার ডিসি ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রয়োজনে কিছু তথ্য চেয়ে কয়েক দফা ডিএনসিসিকে চিঠি দেয়। কিন্তু বর্তমান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৯ সালে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ক্ষতিপূরণের চার হাজার কোটি টাকার পরিবর্তে দুটি চেকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা ঢাকার ডিসি বরাবর পাঠান। ফেরত চিঠিতে ঢাকার ডিসি ডিএনসিসি মেয়রের পত্রকে ‘দুরভিসন্ধিমূলক ও অনভিপ্রেত’ বলে উল্লেখ করেন।
আবদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র আতিকের লোকজনের প্রভাব বিস্তারের কারণে তার পরিবার লালমাটিয়ার দুটি ফ্ল্যাটের ভাড়া পাচ্ছে না। এছাড়া সাভারে কলমা মৌজায় ৯ বিঘা জমি মেয়র আতিক সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দখল করে রেখেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানীর তেজগাঁও বিজয় সরণি এলাকার কলমিলতা বাজার জবর দখল ও অন্যান্য ক্ষতিপূরণ বাবদ চার হাজার কোটি টাকা দুই মাসের মধ্যে না দেওয়া, মেয়র হিসেবে আইনগত দায়িত্ব পালন করার সময় দরখাস্তকারী পরিবারের সম্পত্তি জবর দখলে রাখা এবং আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে অনীহা প্রকাশ করায় আতিকুল ইসলামের মেয়রের শপথ ভঙ্গ হয়েছে, এ জন্য তিনি মেয়র পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। তাই তার মেয়র পদ অবৈধ ঘোষণা করার নির্দেশনা চেয়ে আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে রিট আবেদন করেছি।’#