আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামের বলিষ্ট নেতৃত্ব ও নির্দেশনার আলোকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ ডিএনসিসির কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে অবস্তিত আবদুল্লাহপুরে ‘ খিদির খালটি’ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। উচ্ছেদ হয়েছে প্রভাবশালীদের অবৈধ স্থাপনা।
আজ শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকালে মেয়র আতিকুল ইসলাম উত্তরার এই খালটি পরির্দশনে গিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি ডিএনসিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ওইসময় মেয়রের সঙ্গে ডিএনসিসির কর্মকর্তা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এই খালে এখন পানি প্রবাহ শুরু হয়েছে। বদলে গেছে ওই এলাকার পরিবেশ। মেয়রের এই উদ্যোগটি সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই খালটি উদ্ধারে ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী,মশক নিধন কর্মচারী, রাজস্ব বিভাগের কর্মচারী এবং প্রকৌশল বিভাগের লোকজন, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিরের সহযোগিতা ও অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
ডিএনসিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিশ্রমের কথা স্বীকার করতেই হয়। তাদের সবার পরিশ্রমের ফলে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে আবদুল্লাহপুর ‘ খিদির খালটি’ প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
এই খালটি এতোদিন স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমি দস্যূ, দখলবাজদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। শুধুতাইনয় এই খালে প্রচুর মশা উৎপত্তি হচ্ছিল। সেখানে কলাগাছ, কচুগাছ, আগাছা, জঙ্গলে পরিপূর্ণ। এটি মশার প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে।
ডিএনসিসির ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এই পুরনো খালটি দীর্ঘদিন যাবৎ স্থানীয় ভূমি দস্যূ ও দখলবাজদের অবৈধ স্থাপনা এবং হাউজিং প্রকল্পের নামে বরাট করেছিল। অবশেষে এই খালের ওপর হাউজিং কোম্পানীর “সাফা টাওয়ারের” মালিকের অফিসটি গুড়িয়ে দিয়েছেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম।
গত ১৬ মার্চ মেয়র সকাল সাড়ে ৯ টায় উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে কল্যাণ সমিতির সামনে মশক নিধন কর্মীদের মনিটরিংয়ের জন্য বায়োমেট্রিক ট্র্যাকার উদ্বোধন করেন ।
এরপর মেয়র উত্তরায় খিদির খাল এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান খালের ওপরে অবৈধভাবে নির্মিত একটি ভবনের অফিসমহ আরো কিছু অস্থায়ী রয়েছে।
মেয়র তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি খালের ওপর গড়ে উঠা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন।
মেয়রের নির্দেশে ওই দিন থেকে দিবারাত্রি চেষ্টা চালিয়ে টানা ৩ দিনের মাথায় আজ ১৯ মার্চ খিদির খালটির প্রাণ ফিরে পেছে। একই সাথে ছোট বড় সবধরনের স্থাপনা মুক্ত হয়েছে এই খালটি। এখন এই খালে পানির প্রবাহ শুরু হয়েছে।
গত ১৬ মার্চ মেয়রের পরিদর্শনকালে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরিন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শরীফুর রহমান, মোঃ ফরিদ আহমেদ, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জাকিয়া সুলতানা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা, শ্রমিক -কর্মচারী লীগের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো জানা যায়, মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম ওইদিন উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর স্লুইচ গেইটের কাছে পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র দেখতে পান খিদির খালের সংযোগ মাটি দিয়ে ভরাট করে ‘সাফা টাওয়ার’ নামে প্রস্তাবিত একটি বহুতল মার্কেট সেলস অফিস নির্মাণ করেছে।
এর ফলে খালে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে কলাগাছ, কচুগাছ, আগাছা, জঙ্গলে পরিপূর্ণ। এটি মশার প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে।
মেয়র এই ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। এরপর বেলা ১টার মধ্যে ডিএনসিসির বুল্ডোজার দিয়ে এই অফিস এবং পার্শ্ববর্তী দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা হয়।
মেয়র বলেন, “অবৈধভাবে নির্মিত কোন স্থাপনা ভাঙতে কোন ধরণের বৈধ নোটিস দেওয়া হবে না”।
মেয়র বলেছেন, সরকারি, বেসরকারি, ব্যক্তি মালিকানাধীন সকল ডোবা, নালা, পুকুর, অন্যান্য, জলাশয় পরিত্যক্ত জমি নিজ নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার করতে হবে।
যার যার ডোবা, নালা, জলাশয় তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদকালে মেয়র বলেন, দখল করা এই স্থানটি পুরোটাই সিটি কর্পোরেশনের।
এটি খালের ওপরে। তারা কিভাবে এই জায়গাটি দখল করল। দুই পাশে খিদির খাল মাঝখানে এই জায়গা। এই যে খালের জায়গার ওপরে অবৈধভাবে স্থাপনাসহ কোন কিছুই রাখা যাবে না”।
/ কাশেম