আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ :
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) মেয়রের কাছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের পরিশ্রমী, মেধাবী ও শিক্ষিত পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকরা পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার পদে পদোন্নতি এবং শূন্য পদে পদায়নের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। কারণ তাদের অনেকেই দীর্ঘ ১৫ থেকে ৩৩ বছর পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক পদেই চাকরি করছেন। চাকরির শুরুতে ১১তম গ্রেডে পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক পদে যোগদানের পর অদ্যাবধি ওই একই পদে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সব পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকরা লিখিতভাবে দ্রুত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি এবং পদায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে মেয়রের কাছে বিনীত আবেদন জানিয়েছেন। কারণ বর্তমান মেয়র কর্মকর্তা ও কর্মচারী বান্ধব এবং অনিয়ম ও দুর্নীতিকে কঠোর হস্তে দমনে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ।
তাদের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ ও বেআইনী ভাবে ১৪ তম গ্রেডের কর্মচারী মো. জহিরুল ইসলামকে সরাসরি ৯ম গ্রেডে সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার পদে পদোন্নতি/ অতিরিক্ত দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছে। এই কাজে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকা সত্বেও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মো. জহিরুল ইসলামকে সরাসরি ৯ম গ্রেডের ওই পদে পদোন্নতি/অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে জহিরুল ইসলামকে দেওয়া এই দায়িত্ব বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক পদের (১১ তম গ্রেডে ) যোগদানের পর থেকে এখনো তারা ওই পদেই কর্মরত আছেন। পদোন্নতি পাবার যোগ্যতা থাকা সত্বেও তাদের পদোন্নতির বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ চাপা পড়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ধারী কর্মকর্তা রয়েছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং উন্নত ট্রেনিং সহ যাবতীয় যোগ্যতা থাকা সত্বেও তারা চরম অবহেলিত।
ডিএনসিসির অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পদোন্নতি যোগ্য ২০/২২টি পদনো শূন্য রয়েছে। যেমন- পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা থেকে সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা থেকে উপ প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এবং উপ প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার পদটিও পদোন্নতির যোগ্য। কিন্তু নিয়মিত পদোন্নতি না হবার কারণে ডিএনসিসির বর্তমান ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে ২০/২২টি পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার পদ (১০ তম গ্রেড), সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার (৯ম গ্রেড) অনেকগুলো পদ শূন্য রয়েছে।
অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এই শূন্য পদগুলোতে একমাত্র পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের মধ্য থেকেই ধাপে ধাপে পদোন্নতি এবং পদায়ন যোগ্য।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, ডিএনসিসির সদ্য বিদায়ী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর মঞ্জুর হোসেন বিশেষ উদ্দেশ্যে বেআইনীভাবে প্রভাব খাঁটিয়ে তার এলাকার এবং পরিচিত ১৪ তম গ্রেডের কর্মচারী মো. জহিরুল ইসলামকে সরাসরি ৯ম গ্রেডে পদোন্নতি/ অতিরিক্ত দায়িত্বে পদায়ন করেছিলেন।
শুধু তাইনয়, মো. জহিরুল ইসলামকে সদ্য বিদায়ী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার নিজের দপ্তরে সংযুক্ত করেছেন। ইতোমধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।
আরো জানা যায়, ইতিপূর্বে কর্মকর্তাদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বাছাই কমিটি-১ এর একাধিক বৈঠকে শুধুমাত্র প্রকৌশল বিভাগের প্রভাবশালীদের বিষয় নিয়েই আলোচনার পর পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিষয়টি আলোচনায় স্থান পায়নি। এছাড়াও পদোন্নতি সংক্রান্ত বাছাই কমিটি-২ এর কর্মকর্তাদের বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো বৈঠক হচ্ছে না। সব কিছু মিলিয়ে পদোন্নতি পাবার যোগ্য অনেক কর্মকর্তারা আজ চরম হতাশায় রয়েছেন।
ডিএনসিসির কর্মকর্তা কর্মচারী বান্ধব মেয়রের কাছে পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের আবেদনটি দ্রুত নিস্পত্তি করতে বিনীত আবেদন জানিয়েছেন তারা। # কাশেম