দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
‘সেবা প্রদানে ডিএনসিসি সবসময় মুক্তিযুদ্ধোদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। আমরা ডিএনসিসি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছি। তাদের সম্মানে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিটি ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়ক হবে। সিটি কর্পোরেনের অফিসে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ থাকবে এবং আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। সেবা নিতে আসলে তারা সেই কক্ষে বসবে। এছাড়াও ডিএনসিসির কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ দাফনে কোন ফি লাগবে না।’
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আয়োজননে মহান বিজয় দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সমগ্র বাঙালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন। স্বাধীনতার জন্য, লাল-সবুজের পতাকার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী সবসময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছেন। তাদের জন্য কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে প্রতি বছর সংবর্ধনার আয়োজন করছি। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করতে পারলে, তাদের সম্মান দিলে তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুশি হবেন।’
মেয়র আরও বলেন, ‘ভবিষ্যত প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। আজ উপস্থিত আছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা, উপস্থিত আছেন মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র রক্তের উত্তরাধিকারী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। আমাদের সবাই মিলে দেশটা গড়ে তুলতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই যেমন যুদ্ধে গিয়েছিল, ঠিক তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে এই দেশটাকে এই শহরটাকে সবার জন্য গড়ে তুলবো।’
দখলের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেন, ‘জাতির পিতা যেমন করে দেশকে ভালোবেসেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা যেমন করে দেশকে ভালোবেসেছেন ঠিক তেমনি করে আমাদের দেশকে এবং এই শহরকে ভালোবাসতে হবে। আমরা দেখছি অনেকে খাল, মাঠ, রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে। দখল-দূষণ বন্ধ করতে হবে। যাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে তারা কখনো অবৈধ দখল করতে পারে না। সুন্দর শহর গড়ে তুলতে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মীরজাফরের বংশধর এখনো বেঁচে রয়েছে, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব ও দেশ স্বাধীন করার অবদান স্বীকার করে না। সেজন্য তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধারা যতদিন বেঁচে আছি সবাই একসঙ্গে থাকব, একসঙ্গে চলব। আমরা সব সময় দেশের বিজয়ের কথা বলব। আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছি তখন আমাদের কাছে হাতিয়ার ছিল না। একটি জিনিস ছিল, একটি স্লোগান ছিল জয় বাংলা। আমাদের একটি দাবি ছিল, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগানে পরিণত করা হোক। আজকে সেটা জাতীয় স্লোগানে পরিণত হয়েছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা তার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে সবকিছুতেই ঋণী।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনা ও স্মৃতি তুলে ধরেন।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ মোঃ জোবায়দুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যসহ মোট ১২শ জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা শেষে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংগীতশিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। # কাশেম