দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবার জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ) ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ চার প্রতিষ্ঠানে নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে।
এ বিষয়ে দুদকের পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অনুসন্ধান কর্মকর্তা অনুসন্ধানের প্রয়োজনে চিঠি দিতে পারেন।’
জানা যায়, গত ১৯ জুলাই দুদক থেকে পৃথক পৃথক চিঠিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে ভুয়া করোনা রিপোর্ট তৈরি ও সরবরাহ করে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোছা. সেলিনা আখতার মনির স্বাক্ষরিত চিঠিগুলো বিআইএফইউর মহাব্যবস্থাপক, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশাসন), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর অঞ্চল-১০ এর কর কমিশনার এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহ পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) নিবন্ধক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
বিআইএফইউয়ে পাঠানো চিঠিতে সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফ চৌধুরীর ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবের তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তাদের নামে ঋণ গ্রহণের আবেদন, মঞ্জুরিপত্র, বন্ধকি দলিল, বন্ধকি সম্পত্তির টাইটেল ডিড ইত্যাদি তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠানো চিঠিতে পেশাগত সকল নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, সাবরিনা ও আরিফের মালিকানাধীন জেকেজি হেলথ কেয়ারের নিবন্ধনপত্র, কোম্পানির মেমোরেন্ডাম ও অংশিদারত্বের চুক্তিপত্রসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
এনবিআরে দেওয়া চিঠিতে আরিফ ও সাবরিনার আয়-ব্যয়ের হিসাব পেতে টিআইএন সার্টিফিকেটসহ আয়কর রিটার্নের সত্যায়িত কপি চেয়েছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।
গত ১৩ জুলাই দুদকের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগ থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৬ জুলাই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় দুদক।
দুদক জানায়, সরকারি চাকরিতে চিকিৎসক হিসাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে বহাল থেকে তার স্বামী আরিফ চৌধুরীর সহায়তায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে ১৫ হাজার ৪৬০টি ভুয়া মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি ও সরবরাহ করে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান করবে।
ডা. সাবরিনা চৌধুরী কার্ডিয়াক সার্জন। আরিফ চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী সাবরিনা। আরিফের মালিকানাধীন জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা ২৭ হাজার করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই ১৫ হাজার ৪৬০টি মনগড়া ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছেন।
বাকি ১১ হাজার ৫৪০টি রিপোর্ট দিয়েছেন আইইডিসিআরের মাধ্যমে। করোনার রিপোর্ট জালিয়াতির কারণে সাবরিনা চৌধুরীর স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা এখন কারাগারে। # কাশেম