দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় গ্রাম্য সালিশে ৬৫ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানকে পিটিয়ে ও গলাটিপে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটি।
রোববার (১ নভেম্বর) রাজধানীর শান্তিনগরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান শাহীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. কাজী সাইফুদ্দীন, শহীদ সংসদ সদস্য নুরুল হক হাওলাদারের কন্যা জোবায়দা হক অজন্তা, সহসভাপতি সাংবাদিক মিজান রহমান ও ওমর ফারুক সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ রনি, আব্দুল্লাহ-আল মামুন, আল-আমিন মৃদুল, আজহারুল ইসলাম অপু ও আহমাদ রাসেল।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, যাদের বীরত্বে ও আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে এভাবে হত্যা করা কোনভাবেই সহ্য করা হবে না।
তারা বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানের হত্যাকান্ডটিও এরই ধারাবাহিকতার ফসল বলে আমরা মনে করি। এজন্যই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যথায় ভবিষ্যতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আরো বড় কোন আঘাত আসতে পারে। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে নিরাপত্তাহীন রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অর্থহীন হবে।
মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তারা অনতিবিলম্বে মামলার সকল আসামীদের গ্রেফতার ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী ওইসব নরপিচাশদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। দুষ্কৃতকারীদের শুধু গ্রেফতারই নয়, এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এভাবে জাতীয় বীর এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর অন্যায়ভাবে হাত তোলার সাহস না পায়।
উল্লেখ্য গত৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের মটরা গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানকে পিটিয়ে ও গলাটিপে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে হাবিব খান বাদী হয়ে শনিবার ১১ জনের নাম উল্লেখ করে বাসাইল থানায় হত্যা মামলা করেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চিহ্নিত সন্ত্রসীদের মাত্র দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচারে কোন পক্ষের শৈথিল্য কোনভাবেই সহ্য করা হবে না। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি