দূরবীন নিউজ প্রতিনিধি :
আসন্ন ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দে প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিচার বিভাগের বরাদ্দ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার দাবি জানানো হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে অর্থ বরাদ্দ বুদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে। জাতীয় ঘোষিত বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের সর্বসাকুল্যে ১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা এবং সুপ্রিম কোর্টের জন্য ২৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ এর মন্ত্রণালয়/বিভাগভিত্তিক বরাদ্দের সংশ্লিষ্ট নথি যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে ১২ জুন এ আবেদন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এস এম আরিফ মন্ডল। আবেদনের একটি করে অনুলিপি অ্যাটর্নি জেনারেল, আইনমন্ত্রী, আইনসচিব, অর্থসচিব এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি অবহিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এস এম আরিফ মন্ডল। আইনজীবী জানান, আগামী অর্থবছরে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বাজেটে প্রস্তাবিত বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বিচার বিভাগ পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত।
এই বিভাগের বাজেট বৃদ্ধি করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত বিচারক ও লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করা গেলে মামলাজটসহ বিচার বিভাগের নানা সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। বিচার বিভাগের নানা সমস্যা উল্লেখ করে বাজেট বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে আবেদন জমা দেন।
বর্তমানে অধস্তন আদালতের অন্যতম সংকট বিচারক স্বল্পতা ও লজিস্টিক সাপোর্ট। ক্ষেত্র বিশেষে কোনো কোনো আদালতে ১০ হাজারের বেশি মামলা চলমান রয়েছে। দেশে প্রায় ২০ কোটি মানুষের বিপরীতে অধস্তন আদালত বিচারকের সংখ্যা এক হাজার ৮০০ জন। এ বিচারকদের মধ্যে বেশিরভাগ বিচারকই প্রয়োজনীয় লজিস্টক সাপোর্ট থেকে বি ত। বিচারিক আদালতের মামলা ব্যবস্থাপনার অনেক সমস্যা রয়েছে।
দেওয়ানি আদালতে স্টেনোগ্রাফারের মতো অতিপ্রয়োজনীয় কর্মচারি সংকট। উন্নত এবং যুগোপযোগী বিচারিক কর্মপরিবেশ প্রয়োজন। অথচ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের চাকরির প্রথমদিন থেকেই সব সুযোগ-সুবিধা পান। জেলা পর্যায়ে দেওয়ানি আদালতের বিচারকদের রায়/আদেশ কম্পিটার, প্রিন্টারসহ সংশ্লিষ্ট স্টেশনারি ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে নিজ হাতে লিখতে বাধ্য হন, ফলে সংশ্লিষ্ট বিচারকের অনেক সময় অপচয় হয়। বিচারপ্রার্থীদের নকল পেতে বিলম্ব হয়।
ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো ব্যয়বহুল শহরে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধার অপ্রতুলতা রয়েছে, তাছাড়া বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের খরচে হিমশিম খেতে হয়। এ জন্য সব জেলায় বিচারকদের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা দরকার অবকাঠামো, যানবাহন, আবাসিক সমস্যাসহ আদালত প্রাঙ্গণের অন্যান্য সমস্যাদির সমাধানের জন্য সরকারের অপরাপর মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। যা স্বাধীন বিচার বিভাগের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় উন্নত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সরকারের সব মন্ত্রণালয়ের আইন কর্মকর্তা পদে একজন করে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নিয়োগ নিশ্চিত করা গেলে সরকারি মামলা পরিচালনাসহ ক্রয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে। অন্যান্য দেশের মতো মোবাইল কোর্ট জুডিসিয়াল অফিসারের মাধ্যমে পরিচালিত হলে সাধারণ মানুষের আস্থা আরো বেশি বাড়বে।#