দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
কুমিল্লার লাকসামে মাদ্রাসার জমি দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, মানববন্ধন এবং অপসারণের দাবি অবান্তর ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
১২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে আইসিটি বিভাগ আয়োজিত ‘কুমিল্লা বিভাগীয় স্টার্টআপ ইনকিবেউশন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুনেছি সরকারি খাস জমিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ডিসি-ইউউএনও আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীনদের ঘর দেয়ার গ্রহণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। কুমিল্লা, ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমার নিজের বেশ কয়েকটি বাড়ি আছে যেখানে থাকার লোক নেই। অনেক জমা-জমি আছে চাষ করার মানুষ নেই। আমি কেন তার বাড়ি এবং মাদ্রাসার মাত্র ১১ ডিসিমাল জমি দখল করতে যাবো যার মূল্য ৫-১০ লাখ টাকার বেশি হবে না। এটি আমার বোধগম্য নয়।’
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কোনো যৌক্তিক কারণে ঐ জমি যদি তাদের প্রয়োজন পড়ে তাহলে তারা প্রশাসনের কাছে বলতে পারতো। আমি যেহেতু এলাকার সংসদ সদস্য আমাকেও জানাতে পারতো। আমাকে জানালে ওখানকার পরিবর্তে অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করা হতো। আমি যখন শুনেছি এখানে তাদের আপত্তি আছে। সঙ্গে সঙ্গে ডিসিকে ফোন করে স্থগিত রাখার কথা বলেছি। কিন্তু আমি যে বিষয়ে কিছুই জানি না তা নিয়ে অভিযোগ তুলে মানববন্ধন, আমার অপসারণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করা বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই। আমার মনে এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেউ ঘটিয়েছে।’
সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে গণতান্ত্রকে রক্ষা করা, নির্বাচনে অংশ নেয়া। এখন তারা যদি সার্চ কমিটিতে নাম না দেয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে। তাহলে সেটি দলের নিজস্ব বিষয়। তবে তাদের যদি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা থাকে তাহলে ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি এবং জ্বালাও পোড়াও ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে বিশ্বাস করি।
এর আগে অনুষ্ঠানে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার বিশ্বে নিজেদের সক্ষমতা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে টিকে থাকতে হবে। এলক্ষে গবেষণার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আইসিটি ও মানবসম্পদসহ নতুন নতুন সম্ভাবনার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া আহ্বান জানান।
কুমিল্লা শহরের উন্নয়ন ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুমিল্লা জেলার সুপেয় পানি ও সুয়ারেজ সমস্যা সমাধানে কুমিল্লা ওয়াসা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, পৃথিবীর বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়। আমাদের দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কিছু সংখ্যক প্রার্থী নির্বাচিত হওয়াকে কেন্দ্র করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার কোনো সুযোগ নেই।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ কে এম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এএফএম আব্দুল মঈন এবং উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মোঃ মিজানুর রহমান।
এছাড়া কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবু তাহের অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, উদ্ভাবন সহায়ক ইকোসিস্টেম ও উদ্যোক্তা সংস্কৃতি তৈরি, তরুণ উদ্ভাবকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, প্রান্তিক পর্যায়ের তরুণদের মাঝে ব্যাপকভাবে উদ্ভাবনী ধারণাকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের আওতায় ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প’ তথা ‘আইডিয়া’ প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকল্প আওতায় কুমিল্লা ও এর আশপাশের জেলাগুলোর স্টার্টআপদের জন্য আগামী তিন দিনব্যাপি নিবিড় প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এএফএম আব্দুল মঈন এবং উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মোঃ মিজানুর রহমান। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি