দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
চীন থেকে বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশীদের দেশে আনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট, কেবিন ক্রুসহ মোট ২০ জন সদস্য প্রায় চার দিন ধরে নিজ নিজ বাসায় একা থাকছেন। খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমের।
এর আগে তাদের সবাইকে অফিস না করে যার যার বাসাতেই মাস্ক পড়ে একাকী থাকার জন্য ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলে দিয়েছিলেন।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকাব্বির হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, চীন থেকে সে দিনের ফ্লাইটে যাত্রী নিয়ে দেশে ফেরাদের মধ্যে ছিলেন বিমানের চারজন পাইলট, ১১ জন কেবিন ক্রু এবং পাঁচজন গ্রাউন্ড সার্ভিসের স্টাফ। মোট ২০ জন।
তিনি বলেন , আমার একজন পাইলট তার সিমুলেশন ট্রেনিং ছিল সিঙ্গাপুরে। ওই জন্য কালকে (রোববার) ভিসার জন্য গিয়েছিল, তারা চায়না এক্সিট এন্ট্রির সিল দেখে তাকে ভিসা দেয়নি।
কোনো পাইলটকে ভিসা দেয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে নাম দেয়ার দরকার নাই। আমার একজন পাইলট। কিন্তু বিভিন্নভাবে ডিসট্রডেটভাবে দেখলাম আসছে মিডিয়ায়। সত্য ঘটনা হলো এটা।
পরে তিনি বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে বলেন, এর মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন সিঙ্গাপুর অ্যাম্বাসিতে গিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ আছে সিঙ্গাপুরে উনার। এর জন্য সিঙ্গাপুর অ্যাম্বাসিতে ভিসা নিতে গিয়েছিলেন। তারা তাকে ভিসা দেয়নি। চায়না এয়ারপোর্টের এক্সিট এন্ট্রি ভিসা আছে। এটা দেখেই ভিসা দেয়নি।
ফ্লাইট নিয়ে দেশে আসা ক্যাপ্টেন, কেবিন ক্রু ও গ্রাউন্ড সার্ভিসের সদস্যদের বিমানবন্দরে থাকা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে কী ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের যে প্রসিডিউর অনুযায়ী চলতে বলা হয়েছিল সেই অনুযায়ী তারা চলছেন।
উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ উড়োজাহাজ (বোয়িং-৭৭৭-৩০০) ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়।
বিমানটি ওই দিন রাত ২টায় ঢাকায় ফেরার সময় নির্ধারণ থাকলেও ১০ ঘণ্টা বিলম্বে সেটি এক জানুয়ারি দুপুর ১২টায় ঢাকায় অবতরণ করে। ফ্লাইং আওয়ার প্রায় ২২ ঘণ্টা ছিল পাইলটদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন বলেন, ফ্লাইট আওয়ার ২২ ঘণ্টা না। তারা (পাইলট) ওইখানে প্রসিডিউরের জন্য গ্রাউন্ডেড ছিল ১১ ঘণ্টার মতো।
পাইলট, কেবিন ক্রুরা কবে নাগাদ ফ্লাই করতে পারবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডিজি হেলথ যেভাবে বলছে সেভাবে প্রসিডিউর মেইনটেন করে যাবে তারা। ডব্লিউএইচও (হু)-এর গাইডলাইন অনুযায়ী সবকিছু করা হচ্ছে। এটা আইকাও সেটাকে এপ্রুভ করেছে, আমরাও সেইভাবে করছি। এ কারণে অন্য ফ্লাইটে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চারজন অভিজ্ঞ ককপিট ক্রু, ১১ জন কেবিন ক্রু ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্বে থাকা পাঁচজন সদস্যসহ মোট ২০ জনকে বিমানবন্দরে আসার পরই অফিস না করে বাসায় একা থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এর পর থেকে তারা সবাই বাসায় একাকী থাকছেন, সময় পার করছেন।
এ প্রসঙ্গে গতকাল রাতে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা নয়া দিগন্তকে বলেছেন, উহান থেকে বাংলাদেশী নাগরিকদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যে পাইলট কেবিন-ক্রুরা এনেছিলেন তাদের প্রত্যেককে ১৪ দিন নিজ বাসায় মাস্ক পরে থাকতে বলা হয়েছিল। তাদের বাইরে না যাওয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। #