দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
গ্রাম পর্যায়ে নাগরিক সুবিধার বাড়াতে ভূমির ব্যবহারে সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.)। একই সাথে গ্রাম পর্যায়ে কাঙ্খিতমানের নাগরিক সুবিধার সম্প্রসারণ নিশ্চিত করণে উপজেলা ভিত্তিক ভূমি ব্যবহারের বিষয়ে সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বি.আই.পি এর পরিকল্পনাবিদরা।
গত ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর প্ল্যানার্স টাওয়ারে পরিকল্পনাবিদ পেশাজীবীদের জাতীয় শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.)-র বার্ষিক সাধারণ সভায় এমন পরামর্শ দিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদগণ।
বার্ষিক সাধারণ সভায় ইনস্টিটিউটের বোর্ড সদস্য পরিকল্পনাবিদ মোঃ রবিউল আউয়ালের সঞ্চালনায় বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউটের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম।
উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন বি.আই.পিকে ভবিষ্যতে নগর ব্যবস্থাপনা ও নগর পরিকল্পনার সকল স্তরের বিষয়টি সামনে রাখতে হবে। বিশেষ করে শহর ও নগরের মহাপরিকল্পনা এবং বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাসমূহের সঠিকভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজনে নগর উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে ক্রমাগত পরামর্শ ও নিরীক্ষণের দায়িত্ব বা সহায়তা করতে হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমাপে ঢাকা বসবাসের অযোগ্য শহর হিসেবে ইতিমধ্যে বিবেচিত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে বি.আই.পি-কে এ বিষয়ে গবেষণা ও পরিকল্পনার নিরিখে সরকার ও অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনের মতামত সাপেক্ষে বিশেষ করণীয় পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে।
ড. গোলাম রহমান আরো উল্লেখ করেন, জেলা উপজেলা সমূহে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতি এবং জনদূর্ভোগের কথা। তিনি বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এবং ভয়াবহতা বিশ্লেষণপূর্বক মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি, যা কৃষি সম্পদ সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সহায়ক হবে।
এছাড়াও উপজেলাসমূহের জন্য উপজেলা মাষ্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পৃথক পরিকল্পনা বিভাগ সৃষ্টির মাধ্যমে পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করা। সেইসাথে পরিকল্পনাবিদদের নিয়োগ এবং কাজের ব্যাপ্তি নিয়ে বি.আই.পি.-কে জাতীয় পর্যায়ে আন্দোলন ও নিজেদের পেশাগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ক্রমাগত কার্যক্রম চালাতে হবে বলে তিনি পরামর্শ প্রদান করেন।
বি.আই.পি.র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকান্ড সম্পর্কে একটি বিশদ প্রতিবেদন পাঠ করেন।
সাধারন সভায় উপস্থিত সকল পরিকল্পনাবিদ সদস্যদের সামনে বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বি.আই.পি.-র আয়-ব্যয়ের পর্যালোচনা পূর্বক একটি পূর্নাঙ্গ অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন বি.আই.পি.-র বোর্ড সদস্য পরিকল্পনাবিদ তৌফিকুল আলম।
সাধারণ সভায় পরিকল্পনাবিদগণ পরিকল্পনা পেশার উন্নয়ন, চাকুরির ক্ষেত্রে পরিকল্পনাবিদদের সুযোগ সম্প্রসারন, প্ল্যানিং ক্যাডার চালুকরণ, পেশাজীবী সংস্থা হিসাবে পরিকল্পনাবিদদের পেশাগত উন্নয়নে বি.আই.পি.-র করণীয় এবং বি.আই.পি. কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিকল্পনাবিদদের করণীয়সহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।
এছাড়াও সকল উপজেলাভিত্তিক মহাপরিকল্পনা বিশেষত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সকল গ্রাম ও ইউনিয়নের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে গ্রাম পর্যায়ে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চতকরণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর গ্রামীণ এলাকার পরিকল্পনার প্রণয়ন ও ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ স্বপ্নের পরিকল্পিত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইউনিয়ন সেন্টার পরিকল্পনা জরুরী বলে পরিকল্পনাবিদগণ মত দেন।
পরিকল্পিতভাবে ইউনিয়ন সেন্টার পরিকল্পনার মাধ্যমে সেখানে আবাসন, শিক্ষা, স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, ব্যাংক, পুলিশ ফাঁড়ি, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে বলে সভায় উপস্থিত পরিকল্পনাবিদগণ মতামত প্রদান করেন। #