দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটি করেপারেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম নগরবাসীর উদ্দ্যেশে বলেছেন, ‘ঢাকা’শহরকে ভালোবাসতে হবে। শহর নোংরা করা যাবে না। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না।’ তিনি বলেন, ‘নগরবাসীর জন্য ১৮টি পার্ক ও ৪টি খেলার মাঠ নির্মাণ করেছি। এই মাঠ ও পার্কগুলো মেইনটেইন করতে হবে। এসব পার্ক ও খেলার মাঠ এলাকাবাসীই ব্যবহার করবে। ফলে মাঠের মাঠ রক্ষার বিষয় এলাকাসীকে সচেতন হতে হবে। উন্নয়নকৃত মাঠ-পার্ক আপনারা দেখে রাখবেন, রক্ষা করবেন।’
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মধুবাগ এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল কমপ্লেক্স পাঠাগার ও মধুবাগ মাঠ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল কমপ্লেক্স পাঠাগারে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় একটি শেখ রাসেল ডিজিটাল আইসিটি ল্যাবের উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ফুটবল খেলাও উদ্বোধন করেন মেয়র।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। এই এলাকার দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ দূর হয়েছে। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি বাংলাদেশ বদলে দেবেন। বাংলাদেশ তো বদলে দিয়েছেনই এই এলাকাও বদলে দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভোলা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং প্রকল্প পরিচালক তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেমসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘অবৈধ দখলমুক্ত করে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করেছি। খেলাধুলার সুযোগ মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সহায়তা করবে। একটা শ্রেণি চেয়েছিল বনানী পার্কটিতে গাড়ির পার্কিং সেন্টার করবে। বড়লোকদের গাড়ি পার্কিং করবে সেখানে। কিন্তু আমি সেটি হতে না দিয়ে জনগণের জন্য উন্মুক্ত পার্ক নির্মাণ করে দিয়েছি। টেন্ডারের মাধ্যমে মাঠ ও পার্কগুলো মেইনটেইন করার জন্য দায়িত্ব দিব। তাহলে এর সঠিক ব্যবস্থাপনা হবে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘একসময় এই মধুবাগে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়ে যেতো। মধুবাগে এখন আর জলাবদ্ধতা হয় না। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। বৃষ্টি হলে এখন অল্প সময়ের মধ্যেই পানি নেমে যায়।’
মেয়র আরো বলেন, ‘শহরকে ভালোবাসতে হবে। শহর নোংরা করা যাবে না। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা যাবে না। ড্রেনে খালে সবাই ময়লা ফেলে দিচ্ছি। সিটি কর্পোরেশন থেকে ড্রেনের এবং খালের ময়লার প্রদর্শনী করবো। পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি সারফেস ড্রেনে দিয়ে খাল দূষণ করা হচ্ছে। গুলশান বারিধারার জমি অনেক দাম। একটি ফ্লাটের দাম প্রায় ৫০ কোটি টাকা অথচ অল্প টাকা খরচ করে বাড়িতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা রাখে নাই। আমাদের টিম পরিদর্শন শুরু করেছে। পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ ড্রেনে পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেদিন দেখলাম বিএনপির তারেক রহমান নতুন একটি হ্যাশ ট্যাগ দিয়েছেন। সেটির নাম হচ্ছে টেকব্যাক বাংলাদেশ। এর মানেটা কি? বাংলাদেশকে আরও পেছনে নিয়ে যাওয়া। আবার বোমাবাজি, খাম্বা, হিন্দুদের ঘরে ঘরে গিয়ে লুণ্ঠন করা। তারা জঙ্গিবাদ চায়, তারা উন্নয়ন চায় না। আমরা উন্নয়ন চাই। বাংলাদেশের মানুষ আর পিছনে ফিরে যেতে চায় না। বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চায়। বাংলাদেশের জনগণ আগামী নির্বাচনে আবারও শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে।’ ডিএনসিসি মেয়র প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রীত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে উদ্বোধন করেন এবং মাঠে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ, মধুবাগ খেলার মাঠটির উন্নয়ন কাজের সংক্ষিপ্ত তথ্যাদি নি¤œ রুপঃ ১) কাজের নাম: মধুবাগ খেলার মাঠ উন্নয়ন কাজ।২) মাঠের মোট আয়তন: ১.৫৪০৮ একর।৩) মাঠের উন্নয়ন ব্যয়: ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ৪) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান: ভিত্তি-ডিপিএম জেভি।৫) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান: মেসার্স জি.কে এন্টারপ্রাইজ।৬) কাজ শুরুর তারিখ: ২৮/০৯/২০২১ খ্রিঃ।৭) কাজ সমাপ্তির তারিখ: ১০/০৬/২০২৩খ্রিঃ।
৮) কাজের প্রধান প্রধান অঙ্গ:।(ক) সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত ৮০ গজ বাই ৫০ গজ। (খ) মাঠে পানি দেয়ার জন্য স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা।(গ) মাঠের মধ্যে আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। (ঘ) ক্রিকেট খেলার জন্য উন্নত মানের ক্রিকেট পীচ।(ঙ) মাঠের চারিদিকে প্রশস্থ পায়ে হাঁটার পথ ও সাইকেল লেনের ব্যবস্থা।(চ) মাঠের পূর্ব পার্শ্বে প্রশস্ত উন্মুক্তস্থানসহ বসার ব্যবস্থা। (ছ) ইউরোপিয়ান স্টান্ডার্ড লাইটিং ব্যবস্থা।(জ) সিসি ক্যামেরা ও টিভি সহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।(ঝ) ছোট বাচ্চাদের জন্য এগুলুসিভ খেলার জায়গা চিল্ড্রেন কর্ণার।(ঞ) শরীর চর্চার ব্যবস্থা।(ট) রাতে খেলাধুলা করার জন্য ফ্লাইড লাইটের ব্যবস্থা। (ঠ) বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের ছোট বড় প্রায় ১১৭০ টি গাছ রোপন করা হয়েছে ।
# কাশেম