দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক :
ব্যবসায়ী মো. সাহেদুল হকের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত থাকা এবং সাড়ে ১৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় একে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদক জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। তিনি জানান,
মামলার আসামি মো. সাহেদুল হক ২০১৭-১৮ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর রিটার্নে ক্রিস্টাল ব্রীজ প্রাইভেট লিমিটেডের এক লাখ এক হাজার শেয়ারের বিনিয়োগ দেখিয়েছেন এক কোটি এক লাখ টাকা। যার প্রকৃত আয়ের উৎস পাওয়া যায়নি।
আসামি সাহেদুল হক নগদ ও বিভিন্ন ব্যাংকে জমা ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিয়েছেন। দুদকের অনুসন্ধানকালে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রাপ্ত তথ্য ও তার নামে বিভিন্ন সঞ্চয়ী হিসাব যাচাই-বাছাই করে ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। যার কোনো বৈধ আয়ের কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও আসামির নিজ নামে আরো ২ কোটি ৬২ লাখ ৬১ হাজার ৪৮৮ টাকার স্থাবর সম্পত্তি তথ্য পাওয়া যায় যা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ। এভাবে দুদকের অনুসন্ধানে সাহেদুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে মোট ১৩ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার ৯৩২ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৮ই সেপ্টেম্বর থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীদের গ্রেপ্তার হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা দায়ের করলো দুদক।
আরো জানা যায়, কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছেন। অপর সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সালাহউদ্দিন আহমেদ, গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান
ইতিপূর্বে ক্যাসিনোতে জড়িত থাকা এবং অবৈধ সম্পদের অভিযোগে আরো বেশকয়টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলেন- ঠিকাদার জি কে শামীম, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও তাঁর ভাই রুপন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান, বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, কলাবাগান ক্লাবে সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ, কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান, তারেকুজ্জামান রাজীব, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, এনামুল হক আরমান, যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার সুমা,কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ, যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান এবং গণপূর্তের সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. মুমিতুর রহমান ও তার স্ত্রী মোছা. জেসমীন পারভীন । #