দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হকের ‘জুন থেকে পোশাক শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হবে’ বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন । একই সাথে জনগনের অর্থ খাওয়া পোষাক শিল্প মালিকরা নিরীহ ও অসহায় শ্রমিকদের চাকরি খাওয়ার মতলব করছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সংগঠনের নেতারা।
শনিবার (৬ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও সমন্বয়ক মো. মহসিন ভুইয়া এসব কথা বলেন।
জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের নেতারা আরো বলেন, জনগনের উপর জুলুম ও মালিক শ্রেনীর লুটেরা চরিত্রের নগ্ন বহি:প্রকাশ ঘটেছে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হকের এই উদ্যোগের মধ্যদিয়ে। বিজিএমইএ সভাপতিসহ মালিক পক্ষকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই কোন রকম অজুহাতেই শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না, শ্রমজীবী মানুষ তা মানবে না।
তারা বলেন, বিশ্বব্যাপীই আজ করোনর কারনে সমস্যা তৈরী হয়েছে। আর এই অনাকাঙ্খিত বাস্তবতার দোহাই দিয়ে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পক্ষে বিজিএমইএ’র সাফাই গাওয়া দেশের শ্রমজীবী মানুষের সাথে প্রতারনার শামিল। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এবং কোনও অজুহাতেই শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পোষাক শিল্প মালিকরা কি মনে করেন? দেশের অর্থনীতিতে বড় রফতানি আয় তারা আনেন এটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনই সত্য যে, আমাদের সস্তা শ্রমিকের ঘামে ভেজা, রক্ত পানি করা শ্রমেই তারা তা আনেন এবং বিত্তশালী হন। বিদেশে অঢেল সম্পদ, দেশে বিত্তবৈভব ক্ষমতা বিলাসি জীবন ভোগ করেন। সারাজীবন সরকার তাদের দুধেভাতে পুষেছে, আর তারা জনগনের টাকায় হৃষ্টপুষ্ট হয়েছেন তারা।
তারা আরো বলেন, একসময় ইনটেনসিভ পেতেন পোষাক শিল্প মালিকরা। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাকালে তাদেরকে জনগনের পাঁচ হাজার কোটি টাকা সরকার প্রনোদনা প্রদান করেছে। জনগনের টাকা খাওয়া পোষাক শিল্প মালিকরা করোনার প্রথম প্রতিরোধ পর্ব ভেঙ্গে কারখানা খুলে শ্রমিকদের অমানুষের মতো পথে নামিয়ে আনেন চাকরি রক্ষার হুমকিতে। করোনা ছড়িয়ে দেন দেশব্যাপী।
তারা সরকারের কাছ থেকে প্রনোদনার নামে জনগনের পাঁচ হাজার কোটি টাকা আত্মস্যাত করবেন। পরে যখন দেখা গেল সরকার দুই শতাংশ সুদে ঋন দিয়েছে তখনই তাদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও তারা সরকারের টাকা নিয়েও শ্রমিকের বেতন বোনাস দিতে বিলম্ব করেছে। করোনাকালেও শ্রমিকরা রাস্তায় বিক্ষোভ করতে বাধ্য হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মহামারির সময় কারখানা চালানোর জন্য সরকারি প্রনোদনার টাকা পেয়েছে পোশাক শিল্প মালিকরা। এরপরও সব লোকসানের বোঝা শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের এই অযৌক্তিক ও অন্যায় সিদ্ধান্তের কারণে লাখ লাখ শ্রমিক সংকটে পড়বে। শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতির অন্যায্য বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
তারা বলেন, জুন থেকে শ্রমিক ছাটাই করার ঘোষণা বিপদকালে কতটা নির্মম হতে পারে পারে ? আর কতো শোষন? কত টাকা আর বানাবেন এই শোষকরা। দুই তিনমাস ভর্তুকি দিতে পারেননা কেনো? এতো বছরের লাভ কোথায় ? আর যদি লাভ না হয় তাহলে বছরের পর বছর ব্যাবসা করেন কেন ? কি রহস্য ? এতো বছর শ্রমিকের রক্ত খেয়ে তাজা হয়ে এখন তাদেরই চাকরি খাবার দু:সাহস কোথা থেকে দেখান তারা ? প্রহসনের সীমা থাকা উচিত। তাদের মনে রাখা উচিত এই দিন দিন না, আরো দিন আছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের জন্য চিকিৎসা বিমার ব্যবস্থা; ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের কাজের নিশ্চয়তা এবং করোনা আক্রান্ত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা ও চিকিৎসার দায়িত্ব মালিক ও সরকারকে নিতে হবে।’ # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।