আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ :
ঢাকার উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জ উপজেলার হযরতপুর কেন্দ্রিয় কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও মুক্তি হাউজিংয়ের মালিক আলহাজ্ব মোক্তার হোসেন । তিনি সবাইকে এক শোক সাগরে ভাসিয়ে চিরদিনের জন্য চলে গেলন। এমন দেশে চলে গেলেন, আর কখনো ফিরে আসার সুযোগ নেই।
গত ৬ জুলাই ভোরে তিনি হ্নদ রোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ( إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ )।
মাত্র ৬৬ বছর বয়সে তিনি চলে গেলেন। আর যাবার সময় রেকেগেলেন, স্ত্রী, ৩ কন্যা ও ১ ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়- স্বজন এবং শুভাকাঙ্খি । আলহাজ্ব মোক্তার হোসেনের আকষ্মিক মুত্যুর বিষয়টি ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে। এমন একজন ভাল মানুষ এভাবে নিরবে চলে গেলেন।
সোমবার বাদ জোহর মিরপুর পীরেরবাগে মরহুম বাসভবন সংলগ্ন মুক্তি হাউজিং জামে মসজিদ চত্ত্বরে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কেরানীগঞ্জ উপজেলার হযরতপুর ইউনিয়নে উত্তর বালুর চর গ্রামে মরহুম মোক্তার হোসেনের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে মোক্তার হোসেনকে হযরতপুর কেন্দ্রিয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তিনি ছিলেন এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। কারো সাথে দেখা হলে হাসি মুখে কথা বলতেন। সালাম বিনিময় করতেন। যে কোনো সমস্যা নিয়ে তার কাছে আসলে, তিনি সমাধানের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। এমন দরদি মানুষ সমাজে খুব কম পাওয়া যায।
আলহাজ্ব মোক্তার হোসেন ১৯৫৫ সালে ২৯ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নে উত্তর বালুর চর গ্রামে এক সমভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জম্ম গ্রহণ করেন
দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের কল্যানে এক সময় সারাদেশ ঘুরে বেড়াতেন। সরেজমিনে গিয়ে গিয়ে দলিল লেখকদের বসা এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থায়ী শেঠ নির্মান করে দিয়েছেন। সারা দেশের অবহেলিল দলিল লেখকদের ঐক্য বদ্ধ করেছেন। রাজপথে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বয়সের এক পর্যায়ে যখন তিনি সমিতির নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন, তখনই এই সংগঠনে শুরু হয়েছে বিভক্তি। বর্তমানে নানা সমস্যায় পড়েছেন সমিতির সাধারণ সদস্যরা।
এদিকে খোজঁ নিয়ে আরো জানান যায়, মোক্তার হোসেন সারাজীবন বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের কল্যানে কাজ করে গেছেন। যারফলে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা তাকে ঐক্যের প্রতীক মনে করতেন। এই সমিতির সদস্যরা তাকে একজন অভিভাবক হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে দেখতেন। আজ মোক্তার হোসেনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা একজন অভিভবকে হারিয়েছেন। আর এই অভাব সহজে পুরন হবার মতো নয়।
তিনি সব সময় মানুষের কল্যাণের কথা ভাবতেন। তিনি শুধু দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের নেতাই ছিলেন না , তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা। রাজধানী পীরেরবাগ এলাকায় পানির সমস্য নিরসনে নিজের জমি দান করেন, বর্তমানে ওই জমিতে ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্প বসানো হয়েছে। কেরানীগঞ্জে স্কুল- কলেজ , মাদ্রাসা, খেলার মাঠ, কবরস্থান এবং রাস্তা ঘাট উন্নয়নে অনেক অবদান রেখে গেছেন।
তিনি একজন ভাল মানের ব্যবসায়িও ছিলেন। আলহাজ্ব মোক্তার হোসেনের প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, মুক্তি রিয়েল এস্টেট লিমিটেড ( মুক্তি হাউজিং), মুক্ত ধারা সিটি লিমিটেড, সিবি হ্যাচারি লিমিটেড। এছাড়াও তিনি রাজধানী ঢাকাসহ তার নিজের গ্রাম এলাকায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। তার এসব প্রতিষ্ঠানে অনেকের কর্মস্থান হয়েছে। # কাশেম